স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগি ও গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা এবং গরুর মাংসের দাম বাজারভেদে কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ ও খাসির মাংসের দাম।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

রামপুরা ও খিলগাঁও অঞ্চলের বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ১৩৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে লাল লেয়ার ও পাকিস্তানি কক মুরগি। লাল লেয়ার মুরগি আগের সপ্তাহের মতোই বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা থেকে ২০৫ টাকায়। আর পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে।

ব্রয়লার মুরগির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, প্রায় এক মাস ধরে মুরগির দাম বাড়ছে। যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, সে হারে ফার্ম থেকে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণেই হয়তো বয়লার মুরগির দাম বেড়েছে।

এ ব্যবসায়ী বলেন, প্রথমে দাম বেড়েছে পাকিস্তানি কক মুরগির। তবে বেশ কিছুদিন ধরেই পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে প্রায় এক মাস ধরে। বেশ কিছুদিন ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩৫ টাকায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে এক লাফে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহে রামপুরা, খিলগাঁও ও মালিবাগ অঞ্চলের বেশ কিছু ব্যবসায়ী গরুর মাংস ৪৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করলেও এখন কোনো ব্যবসায়ী ৫০০ টাকার নিচে গরুর মাংস বিক্রি করছেন না।

গরুর মাংসের দামের বিষয়ে হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী সাইফুল বলেন, আমরা নিজেরা গরু জবাই করি না। মাংস কিনে এনে বিক্রি করি। গত সপ্তাহে গরুর মাংস বিক্রি করেছি ৪৮০ টাকায়। কিন্তু এখন আমাদেরই ৪৮০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। যে কারণে ৫০০ টাকার নিচে গরুর মাংস বিক্রি করার উপায় নেই।

গরুর মাংসের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রামপুরার ব্যবসায়ী কাউসার বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের মুরগির দাম চড়া। এর কিছুটা প্রভাব পড়েছে গরুর মাংসের দামে। এ ছাড়া এখন গরু কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে, যে কারণে মাংসের দাম বেড়েছে।

ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে খাসি ও মাছের দাম। খাসির মাংস আগের মতই ৬৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

রুই মাছ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে। পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে। টেংরা মাছের কেজি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙাশ মাছ ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।

এদিকে টমেটো, বেগুন, গাজর, মুলা, শালগম, শিম, নতুন আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পালন শাকসহ হরেক রকম শাক-সবজির সরবরাহে ঘাটতি না থাকায় সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

১০ থেকে ১৫ টাকা কেজির মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে বেগুন, শালগম, মুলা, পেঁপে ও বিচিবিহীন শিম। আর বিচিসহ শিম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে। ফুলকপি ১০ থেকে ২০ টাকা পিস এবং বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২৫ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পাকা টমেটো ও নতুন আলুর। আগের মতো পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। আর নতুন আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচের। আগের সপ্তাহের মতো নতুন দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

পালন শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১৫ টাকা আঁটি। লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি। লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। সরিষা শাক ৫ থেকে ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে।

অবশ্য বেশিরভাগ সবজির দাম তুলনামূলক কম থাকলেও এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে করলা, লাউ ও ধুন্দল। করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, লাউ ৫০ থেকে ৭০ টাকা আর ধুন্দুলের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এ তিনটি সবজির দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৯)