ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : পলাশবাড়ী উপজেলার চরাঞ্চলসহ প্রত্যান্ত অঞ্চলে চলতি মৌসুমে ভুট্টা চাষের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অল্পদিনে কম খরচে কৃষকরা অতি লাভবান হওয়ায় ভুট্টা চাষের দিন দিন কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। 

কম পুজিঁ, ঝুঁকিহীন, সেচ ও সার প্রয়োগে সুবিধা বলেই স্থানীয় কৃষকদের মাঝে রীতিমত ভুট্টা চাষের প্রতিযোগীতা চলছে। এবারে ভুট্টা চাষে আশানুরূপ ফলন পাওয়ার আশায় কৃষকদের মুখে হাসি দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ না হওয়ায় কৃষকরা বেশী বেশী ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এখানকার উৎপাদিত ভুট্টা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলাসহ অন্য জেলায়ও নেওয়া হচ্ছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

পলঅশবাড়ী চর এলাকার ভুট্টা চাষী মামুন জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরী সহযোগীতা পেলে গ্রামীণ কৃষকরা ভুট্টা চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদলে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে। উন্নত জাতের ভুট্টা চাষ করে কৃষকরা প্রচুর টাকা আয়ের মাধ্যমে জীবন জীবিকায় অবদান রাখবে বলে তিনি মনে করছেন।

পলাশবাড়ী উপজেলার মাঠ পর্যায়ে দেখা যায়, বেতকাপা, বরিশাল, মহদীপুর, সদর, ও কিশোরগাড়ী ইউনিয়নসহ অন্যন্যা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের কৃষকরা ভুট্টা চাষ করে আসছেন। এখানকার পরিবারগুলো ভুট্টা চাষ করে বেশী টাকা আয় করছেন বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে। ভুট্টা চাষীদের অনুকরণ করে অন্য চাষে নিয়োজিত কৃষকরাও বর্তমানে এ চাষের দিকে মনোযোগী হচ্ছেন।

উপজেলাার ভুট্টা চাষী পরেশ চন্দ্র বলেন, মাত্র ৯০-১২০দিনের মধ্যে ভুট্টা বা মক্কা গোলার ফলন ঘরে তুলতে পারে। প্রতি বছর শীত কালীন মৌমুমে কৃষকরা ভুট্টা বীজ বপন করে থাকে। মৌসুমের শেষের দিকে এ ফলন বাজারে বিক্রি করে। বীজ মাটিতে বপন করে পুরো সিজনে শুধুমাত্র ১-২ বার জমিতে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এ ক্ষেতে বিঘা প্রতি কৃষককে মাত্র ২-৩বস্তা ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হয়।

এহদীপুর এলাকার ভুট্টা চাষী মজনু মিয়া জানান, একবিঘা জমিতে ১২হাজার ভুট্টার বীজ বপন করা যায়। একেকটি গাছে ২-৩টি ফল ধরে। সাধারণ কৃষকরাও ভুট্টা ক্ষেত করে সহজেই লক্ষাধিক টাকা আয় করছে। অন্য চাষের চাইতে ভুট্টা চাষে কল্পনাতীত টাকা আয় করা সম্ভব বলে তিনি জানান।

বরিশাল ইউনিয়ানের কৃষক আজিজার রহমান বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগীতা ছাড়াই এখানকার কৃষকরা অন্য ফসলের পরিবর্তে ভুট্টা চাষ করে আসছে। কৃষি অধিদপ্তরের কারিগরী সহযোগীতা পেলেই কৃষকরা আরো বেশী লাভবান হবে।

পলাশবাড়ী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ কুমার বলেন, নতুন জাত সর্ম্পকে প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করে যাচ্ছি। যে কোন চাষে কৃষকদের কারিগরী সহায়তা প্রদানে আমাদের মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন।

পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম এসব তথ্য সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভৌগলিক অবস্থায় এ অঞ্চলের জমিগুলো ভুট্টা চাষের জন্য খুবই উপযোগি।

(এসআইআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৯)