রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের ঐতিহাসিক আটিয়া সওদাগরী মসজিদটি ধ্বংসের পথে। এক গম্বুজ বিশিষ্ট সওদাগরী মসজিদটি ঐতিহাসিক স্থাপত্যের একটি উৎকৃষ্ট নির্দশন। এই স্থাপনাটি মজবুত ইটের গাথুনি ও দৃষ্টিনন্দন করেই নির্মিত হয়েছিল। 

আটিয়া গ্রামের লৌহজং নদীর তীরে এ মসজিদটি অবস্থিত। এর পাশেই রয়েছে ৪শত বছরের পুরনো আটিয়া মসজিদ। মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী দেখে ধারনা করা হয় মোঘল আমলের শেষ দিকে অথবা কোম্পানি আমলের প্রথম দিকে নির্মিত হয়েছিল। একসময় আটিয়া পরগনা ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র ছিল। সওদাগররা বাণিজ্য করতে এখানে দীর্ঘ সময় অবস্থান করতেন। সে সময় একজন সওদাগর মসজিদটি নির্মাণ করেন। ধর্মপ্রাণ সওদাগরদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে মসজিদটি নির্মাণ করা হয় বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তবে কালের স্বাক্ষী মসজিটির জরুরীভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা না হলে অচীরেই অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশংঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দেয়ালের স্তর খসে পড়ছে। মসজিদের ছাদে ও দেয়ালের চারিদিকে আগাছা গজিয়েছে। দিন দিন বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে মসজিদটি।

এলাকাবাসী জানায়, আটিয়া হলো টাঙ্গাইল জেলার অন্যতম ঐতিহাসিক একটি নাম। আটিয়াকে ঘিরে গড়ে ওঠেছিল কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য। তা প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কালক্রমে ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। তারা জানায়, এক সময় আটিয়া মসজিদ ও সওদাগরী মসজিদ দেখার জন্য দূর-দুরান্ত থেকে পর্যটকরা ভীর জমাতেন। কিন্তু এখন মসজিদ দুইটি সৌন্দর্য হারিয়েছে। সে কারনে পর্যটক আগের মতো আসেন না। সওদাগরী মসজিদের পাশেই রয়েছে আরেকটি ঐতিহাসিক আটিয়া মসজিদ। এক সময় দশ টাকা নোটে মুদ্রণ করা হয় আটিয়া মসজিদটি। সেটিরও যতœ নেই। আটিয়া মসজিদ ও আটিয়া সওদাগরী মসজিদ দুইটি খুবই প্রাচীন। বর্তমানে প্রাচীনতম আটিয়া মসজিদ ও আটিয়া সওদাগরী মসজিদ দুইটি সংস্কার করা জরুরী হয়ে পড়েছে। তা না হলে এদুটি মসজিদের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

(আরকেপি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯)