ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বিজিবির সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে । সংঘর্ষে বেতনা ক্যাম্পের বিজিবির ছোঁড়া গুলিতে ৪ জন পথচারী নিহত এবং কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের দিনাজপুর আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো  হয়েছে।

নিহতরা হলেন হরিপুর উপজেলার রুহিয়া এলাকার নজরুলের ছেলে নবাব উদ্দীন (৩৫), মৃত জহিরউদ্দীনের ছেলে সাদেক আলী (৪৫), বহরমপুর এলাকার নুর ইসলামের ছেলে জয়নুল (১২) ও আব্দুর রহিমের ছেলে সাদেকুল ইসলাম (৩২)।

আহতরা হলেন, সাদেকুল ইসলাম, মিঠু, ইসহাদিতি, সাদেকুল, তৈমুর, রাসেল, জয়নুল, মুনতাহারা, বাবু, নওশাদ, হান্নান, জয়নুল ও নুর নাহারসহ ১৫ জন।

এলাকাবাসী জানায়, বহরমপুর গ্রামের মাহাবুব আলী প্রায় ৬ মাসে আগে একটি গরু ক্রয় করে। সেই গরু মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে স্থানীয় যাদুরানী বাজারে বিক্রি করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। এ সময় বেতনা ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা ভারতীয় গরু মনে করে ক্যাম্পে গরুটি নিয়ে যাওয়ার জন্য মাহাবুবের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে গেলে মাহাবুবের পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে বাকবিতণ্ডা ও একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে।

পরে বিজিবি গুলি ছুঁড়লে যাদুরানী বাজারের উদ্দেশ্যে আসা ২ জন পথচারী ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং পরে আরও ২ জন নিহত হয়। এই ঘটনায় আহত হয় কমপক্ষে ১৫ জন।

হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, গুলিবিদ্ধ প্রায় ১৫ জনের গুলি বের করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হরিপুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, বিজিবির একটি পেট্রল টিম চারটি গরু সিজ করে ফেরার পথে চোরাকারবারীরা এলাকাবাসীকে নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ বিজিবির ওপর হামলা করে। তাদের অনুরোধ করা হলেও কোনো কথা শোনেনি। একপর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে বিজিবির অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় চারজন বিজিবি সদস্য আহত হওয়ার পর কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করা হয়। এতেও পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় বাধ্য হয়ে বিজিবি গুলি ছোড়ে।

(এফআইআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯)