রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় সড়ক সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ।

মেঘনা উপকূলীয় বেড়ীবাধঁসহ প্রায় ৫কোটি টাকা ব্যায়ে পৃথক ৪টি গ্রামীণ সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ করে কাজ করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। গত ১০ ফেব্রুয়ারি উপজেলা প্রকৌশলী সরেজমিন গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ঠিকাদারদের কঠোর নির্দেশনা দিলেও কাজে আসছে না। ফলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) রায়পুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মাস আগে টেন্ডারের মাধ্যমে উপজেলার কয়েকটি গ্রামীণ সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ। তার মধ্যে ১০ নং রায়পুর ইউনিয়নের মিতালী বাজার থেকে হাওলাদারহাট পর্যন্ত ৩.৮৮০ কিলো মিটার ও হাওলাদারহাট থেকে ঝাউডুগী বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিঃ মিঃ সড়ক ২টি প্যাকেজে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার কাজ পান লক্ষ্মীপুর সদরের আরইএন এন্টারপ্রাইজের মালিকানাধীন মোঃ খোরশেদ। মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চল উত্তর চরআবাবিল ইউপির হায়দরগঞ্জ রচিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন থেকে উত্তর চরবংশীর চমকা বাজার পর্যন্ত ৫ কিঃ মিঃ (৭৫০ থেকে ৫৭৫০ মিটার) ১ কোটি ৪৮ লাখ ৮৫ হাজার ২৭১ টাকা ব্যায়ে এ সড়ক সংস্কারের কাজটি পান লক্ষ্মীপুর সদরের নেহাল ট্রেডার্স। পওে এ কাজটি আবার কিনে নেন রায়পুর ঠিকাদার কৌশিক আহাম্মেদ সোহেল। অপরদিকে চমকা বাজারের পাশে প্রায় ৬৫ লাখ টাকা ব্যায়ে এক কিলো মিটারের কবিরাজ বাড়ী সড়ক সংস্কারের কাজ পান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার সামিয়া এন্টারপ্রাইজ নামে এশটি প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ মুসলিম বলেন, ঠিকাদাররা ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো সিডিউল অনুসরণ না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে দায়সারাভাবে কাজ করছিলেন। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সড়কের সংস্কার কাজ করায় এলাকাবাসীকে নিয়ে কাজে বাধা দেই আমরা কিন্তু ঠিকাদার কর্নপাত না কওে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও একটি কলেজের শিক্ষক নারায়ন মজুমদার বলেন, সংস্কার কাজে প্রকাশ্যে নিম্নমানের ইট, খোয়া ও কংকর ব্যবহার করা হচ্ছে। নামমাত্র বিটুমিন দিয়ে যে কাজ করছেন তাও নিম্নমানের। রাস্তায় সিডিউল উপেক্ষা করে পাতলা করে কার্পেটিং দেয়া হচ্ছে। বেড়ীবাঁধের পাশের মাটি কেটে আবার সেই সড়কেই লাগানো হচ্ছে। ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে নিম্নমানের কাজ হওয়ায় অল্প কয়েকদিনের মধ্যে সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ার আশংকা প্রকাশ কওে তিনি বলেন অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা দিনমজুরের বসতঘর ভেংগে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এতে বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের অন্ত থাকবে না।

রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী আখতার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন গিয়ে অনিয়মের সত্যতা পেয়ে কাজ সঠিকভাবে করার জন্য ঠিকাদারকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি সঠিক না হয় সংস্কারের কাজ ও বিল বন্ধ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

সংশ্লিষ্ট কাজের জেলা সদরের ঠিকাদার খোরশেদ ও রায়পুরের ঠিকাদার কৌশিক আহাম্মেদ সোহেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সিডিউল অনুযায়ী আমরা সঠিকভাবে কাজ করছি। কোন অনিয়ম ও নিম্নমানের কংকর খোয়া, ব্যবহার করা হয়নি।

(পিকেআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯)