স্টাফ রিপোর্টার : পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘সামগ্রিকভাবে দেশে যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা স্বস্তিদায়ক। এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশ সরকার মানবাধিকার সমর্থন করে।’

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ন্যাশনাল ডায়ালগ অন দ্য ইউএন গাইডিং প্রিন্সিপলস অন বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

এম এ মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার মানবাধিকারকে সমর্থন করে-এটা প্রমাণিত হয়েছে। কাজকর্মে, স্কুলে, মাঠে-ময়দানে কয়েক বছর ধরে সামগ্রিক যে স্বস্তি বিরাজমান-সেটাই প্রমাণ করে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক। আমাদের সরকার, আমাদের প্রধানমন্ত্রী, আমরা যে কৌশলে কাজ করছি, সেটা সঠিক। বৃক্ষ তোমার নাম কী, ফলে পরিচয়। আমরা ফলেই পরিচয় দিয়েছি। আমরা ভালো ফল পেয়েছি। প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, চিকিৎসা সুযোগ-সুবিধা আগের তুলনায় সামান্য হলেও বেড়েছে।’

মানবাধিকার অবশ্যই নজরে আছে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘মূল বিষয়গুলোকে মোকাবেলা করতে পারলে মানবাধিকারও প্রতিষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশের যে বাস্তবতা, সেটাকে স্বীকার করে এবং মানুষের মূল সমস্যাগুলোকে নজরে রেখে আমরা কাজ করছি। ফলে সার্বিকভাবে মানবাধিকার দৃশ্যমান।’

তারপরও সরকারকে মাঝেমাঝে ভুল বোঝা হয় বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। এ সময় তিনি শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা করার কথাও বলেন।

বাংলাদেশে মানবাধিকারের দিক দিয়ে অনেক ধাপ এগিয়ে গেছে বলে মনে করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি বলেন, ‘বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, উপবৃত্তি, প্রতিবন্ধীদের সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্নভাবে সামাজিক সুরক্ষার বলয় তৈরি করা হয়েছে।’

সেই সঙ্গে নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন, ধর্ষণসহ নানা কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেই চলেছে বলেও উল্লেখ করেন মানবাধিকার কমিশনের এ চেয়ারম্যান।

ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোড মডেল। আমরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করা হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের আশ্রয় দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে যদি দেশ আগামীতেও থাকে তাহলে মানবাধিকারসহ সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রোল মডেল হবে।’

আইনের শাসন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে পারলে সবকিছুই সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন এফবিসিসিআইয়ের এ সভাপতি।

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, সারা বিশ্বে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা হয়েছে। রানা প্লাজা মালিক পক্ষের সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু এর পেছনে যে বিদেশি ক্রেতারা রয়েছে, তাদের কথা খুব কম লোকেই বলেছে। তারা যদি পণ্য উৎপাদনে বেশি টাকা দেয় তাহলে তো শ্রমিকদের বেতনও বেশি দেয়া যায়, কারখানার পরিবেশও ঠিক করা যায়। তারা বেশি মূল্য না দিলে এখানকার মালিকপক্ষ কীভাবে শ্রমিকদের বেশি বেতন ও সুরক্ষিত কর্মস্থল দেবে, অথচ সেই কথা কেউ বলে না।’

এ সময় আরও বক্তব্য দেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সুদীপ মুখার্জি এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খান।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯)