রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : বিজিবির গুলিতে হতাহতের ঘটনা ও ২৫০ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর ঠাকুরগায়ের হরিপুর বহরমপুর গ্রামে এখন চলছে গ্রেফতার আতংক। প্রশাসনের গাড়ি ঢুকলেই আঁতকে ওঠে স্থানীয়রা। ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আড়ালে চলে যায় তারা। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয়ে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। ওই গ্রামের পাশে দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা আছে।

সম্প্রতি ঐ গ্রামের সন্নিকটের বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টি ইসলাম ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। তার একটু দুরে চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামুল অনেক কম। শিক্ষার্থী না থাকায় ক্লাসও হচ্ছে কম এমনই জানালেন শিক্ষকরা।

ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র কাবুল হোসেন জানায়, স্কুলে আসতে ভয় লাগে। বিজিবির গাড়ি দেখলে লুকিয়ে যাই। তার পরেও আজ এসেছি স্কুলে। আমার ক্লাসের অনেকেই এখনো বিদ্যালয়ে আসছে না।

একই কথা জানালো ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র নওশাদ আলী। সে জানায়, আমাদের পাশের স্কুলের ৫ম শ্রেণির ছাত্র জয়নুল মারা যাওয়ার পর আমরা খুব ভয়ের মধ্যে আছি। এ জন্য বিদ্যালয়ে অনেকেই আসেনা।

ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার দাস বলেন, বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার কম। আতংকে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে কম আসছে। তিনিও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

টি ইসলাম ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন, এই বিদ্যালয়টি অনেক পুরাতন। এখানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। কিন্তু গুলিতে ছাত্র মারা যাওয়ার পর বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা কম আসছে। এ কারনে ৬টি বিষয়ের ক্লাসের পরিবর্তে এখন ৪টি ক্লাস হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রয়ারি বহরমপুর গ্রামে ভারতীয় সন্দেহে গরু জব্দ করা নিয়ে বিজিবির গুলিতে ৩জন নিহত ও ১৫জন গুলিবিদ্ধ হয়।

(কেএএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯)