প্রবীর সিকদার


ভোটের আগেই ভোট ডাকাতির নির্লজ্জ ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে! ব্যক্তি বিশেষের খামখেয়ালিপনায় পছন্দের এক চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়া আর কাউকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতেই দেওয়া হয়নি। হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে কিংবা পুলিশ দিয়ে ধরে এনে নির্যাতন করে অন্য কাউকেই মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ কিংবা জমা দিতে দেওয়া হয়নি। আর এভাবেই ফরিদপুর সদরে নির্লজ্জ বেহায়াপনা করে নির্বাচন পর্বকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত দেখানো হয়েছে!

শুধু ওই পর্যন্ত থাকলেও লজ্জাটা একটু কমই হতো। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন পর্ব শেষে হতে না হতেই এখন চলছে যারা এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে নৃশংস একশন; হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে তাদেরকে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে! এমনকি কোতোয়ালি থানা আওয়ামীলীগের দক্ষ সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর বনিক সমিতির জনপ্রিয় সাধারণ সম্পাদক সামচুল আলম চৌধুরীকেও এলাকা ছাড়া করা হয়েছে।

ফরিদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন এই নির্লজ্জ বেহায়াপনার অবতারণা করা হলো, সেই প্রশ্নের কোনই উত্তর নেই ফরিদপুর সদরের মানুষের কাছে। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থীদেরই জয়লাভের সম্ভাবনাই ছিল শতভাগ। কেননা, এক চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবাই ছিলেন আওয়ামীলীগেরই। ভোটের আগেই ভোট ডাকাতি করে যাদেরকে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে, তারা শুধু বিতর্কিতই নয়, লুটেরাও! সুষ্ঠু নির্বাচন হলে একদিকে যেমন, এদের কেউ জামানত রক্ষা করতে পারতেন না, অপরদিকে আওয়ামীলীগের যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হতেন। আর সেটা হলে ফরিদপুর সদরে আওয়ামীলীগের ঘরে হাইব্রিড লীগের বেড়ে ওঠা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তো এবং বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ ফিরে পেতো নতুন জীবন।

কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগকে অবশ্যই এটা তদন্ত করে দেখতে হবে, ফরিদপুর সদরে কারা কোন স্বার্থে এমন বিতর্কিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আয়োজন করে দলকে লজ্জাজনক অবস্থায় ফেলেছে! সেই সঙ্গে বিতর্কিত ওই নির্বাচনে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর সেটা করা না হলে, ফরিদপুর সদরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগকে গলা টিপে হত্যা করবে হাইব্রিড লীগের দুর্বৃত্ত-লুটেরারা! ফেরাতে পারবে না কেউ!

(পিএস/অ/ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯)