সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সকল দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুলে তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন দলীয় প্রার্থী সঞ্জিত কর্মকারের পক্ষে । ইতোমধ্যেই তারা প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিয়ে একের পর এক করে চলেছেন বর্ধিত সভা,উঠোন বৈঠক,মিছিল-সমাবেশ । দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি ।

আগামী ১০ মার্চ প্রথম ধাপে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তফশীল ঘোষণার পরপরই সরবে মাঠে নামে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না থাকায় নিরব থাকে বিএনপি সহ অন্যান্য দল । এ প্রচার- প্রচারণার মাঝে তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগ সমঝোতার ভিত্তিতে একক প্রার্থী দেয়ার চেষ্টা চালায় । কিন্তু সমঝোতা না হওয়ায় ২৯ জানুয়ারি তৃণমূল ভোটের দলীয় প্রার্থী বাচাইয়ের আয়োজন করে দলটি । সেখানে চেয়ারম্যান পদে পাচ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাত জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন ।

উল্লেখিত ভোটে চেয়ারম্যান হিসেবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার, ভাইস চেয়ারম্যান মো: আনোয়ার হোসেন খাঁন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম সর্বাধিক ভোটে দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হোন । কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো: মনিরুজ্জামান মনি ও সাবেক যুবলীগ নেতা মীর শহীদুল ইসলাম শহিদ নৌকার বিদ্রোহী হিসেবে মাঠে নামেন এবং ১১ ফেব্রুয়ারি চেয়াম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দেন ।

এ নিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে এক বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত বর্ধিত সভায় মো: আব্দুল হকের সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, রায়গঞ্জ-তাড়াশ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা.মো: আব্দুল আজিজ, সাবেক সংসদ সদস্য গাজী ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলন সহ দলীয় নেতাকর্মীরা নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদ্রোহীদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের আহবান জানান । কিন্তু ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন থাকলেও কোন প্রার্থীই তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেননি । সে অনুযায়ি গতকাল ২০ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন তাদের কে প্রতীক বরাদ্দ দেয় ।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার ফারহানা বিলকিস জানান, প্রার্থীদের মাঝে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী সঞ্জিত কর্মকার,স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি পেয়েছেন দোয়াত কলম ও মীর শহীদুল ইসলাম শহীদ পেয়েছেন আনারস প্রতীক ।

মাঠ পর্যায়ে আওয়ামীগ ও যুবলীগের একাধিক নেতাকর্মী জানান,প্রথম পর্যায়ে তাদের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলেও বর্ধিত সভার পর সকল নেতাকর্মী ঐক্য হয়েছেন নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে । জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস যে নির্দেশ দিয়েছেন, তাতেই সার্বিক চিত্র পাল্টে গেছে ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান বলেন, সঞ্জিত কর্মকার একজন ক্লিন ইমেজের মানুষ । দীর্ঘদিন দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যদিয়ে । বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থীর বিজয় এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আট টি ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থীদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে তার অক্লান্ত শ্রম ছিল । সাম্প্রতিক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন ।

যুব ও ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ শাহদৎ হোসেন বলেন, সঞ্জিত কর্মকার একদিনে গড়ে ওঠেনি । ছাত্রলীগ,যুবলীগে নেতৃত্ব দিয়ে তার আওয়ামী লীগে তার উত্তরণ । এলাকায় তিনি একজন সৎজ্জন ও দলের কাছে কর্মী বান্ধব নেতা হিসেবে পরিচিত । আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ সংগঠন । সেখানে দুএকজন ভিন্ন পথে যেতেই পারে । তবে এ নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগ কে কেউ হারাতে পারবেনা ।

কথা হয় তাড়াশে উঠান বৈঠকরত আওয়ামী লীগের প্রার্থী সঞ্জিত কর্মকারের সাথে । তিনি বলেন, সারা জীবন তিনি দলের জন্য কাজ করেছেন ।আর দলও তাকে সম্মানিত করেছে। নির্বাচিত হলে তার প্রথম কাজ হবে তাড়াশবাসীর উন্নয়ন । তিনি তাড়াশ উপজেলা কে ঘুষ,দূর্নীতি , মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করবেন । সেই সাথে শিক্ষাবান্ধব তাড়াশ উপজেলা গড়ে তুলবেন ।

(এমএসএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯)