আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলমান পাক-ভারত উত্তেজনার জেরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশি দুই দেশের মাঝে উত্তেজনা এড়িয়ে আবারো ভারতের সঙ্গে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে উঠে এসেছে কার্যত সব ইতিবাচক বার্তা। তিনি বলেছেন, আমাদের উভয় দেশের হাতেই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। সুতরাং আমাদের আরো দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।

পাকিস্তানের সাবেক এই ক্রিকেট তারকা বলেছেন, সংঘাত যদি শুরু হয়, তাহলে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ আমার হাতেও যেমন থাকবে না, তেমনই নরেন্দ্র মোদির হাতেও থাকবে না।

জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি বলেছেন, আমি ভারতকে বলতে চাই, এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা বোধশক্তি এবং প্রজ্ঞার সমন্বয়ে কাজ করি। যতগুলো বড় যুদ্ধ হয়েছে তার পেছনে ছিল ভুল হিসেব-নিকেশ। হিটলার কখনো ভাবেন নাই যে যুদ্ধ এত বছর ধরে চলবে। আমেরিকানরা কখনো কল্পনা করেন নাই যে, ভিয়তনাম এবং আফগানিস্তান যুদ্ধ দশকের পর দশক ধরে চলবে।

ইমরান খান বলেন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের দুই দেশের অনুকূলে থাকা অস্ত্র নিয়ে কী আমরা একটি ভুল হিসেব-নিকেশ করতে পারি? আমরা যদি এই ভুল করি, তাহলে এটির নিয়ন্ত্রণ যেমন আমার হাতে থাকবে না তেমনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতেও থাকবে না। আমাদেরএকসঙ্গে বসা এবং আলোচনা করা উচিত।

তবে পাকিস্তানি ভূখণ্ডে ভারতের বিমানবাহিনীর অভিযানের প্রতিশোধ নেয়া হয়নি উল্লেখ করে ইমরান খান বলেছেন, বুধবার সকালে পাকিস্তানের হামলার উদ্দেশ্য কোনো প্রাণহানি কিংবা ক্ষয়ক্ষতি ছিল না। তিনি বলেছেন, তার দেশ শুধুমাত্র পাকিস্তানের সক্ষমতা প্রদর্শন করতে চেয়েছে।

ইমরান বলেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারিতে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় তিনি ভারতকে তদন্তকাজে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমরা ভারতের সঙ্গে কথা বলেছিলাম।

তাদের বলা হয়েছিল যদি একতরফা কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়, তাহলে তার জবাব দিতে বাধ্য হবে পাকিস্তান; সেটা যাই হোক না কেন। কিন্তু ভারত বিচারক, জুরি ও জল্লাদের ভূমিকা নিয়েছে। পাকিস্তানের এই নেতা বলেছেন, ভারতীয় বিমান বাহিনী দুটি মিগ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে ভারত দাবি করেছে, শুধুমাত্র একটি যুদ্ধবিমান ও একজন পাইলট নিখোঁজ রয়েছে।

ইমরান খান বলেন, আমরা তাদের দুটি মিগ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছি। পাইলট আমাদের কাছে রয়েছে। কিন্তু আমরা এখান থেকে কোথায় যাব। আমাদের আরো দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
বিবিসি, ডন, ইন্ডিয়া ট্যুডে।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯)