চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলায় গ্রামের নারীরা আসন্ন ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। সংসারের কাজের পাশাপাশি দিনরাত পরিশ্রম করে শাড়ি ও বিভিন্ন কাপড়ে জরি, পুঁতি বসানোর কাজ করছেন তারা। ঈদের আর মাত্র ক’দিন বাকি তাই দিনরাত সমান তালে বেড়েছে এসব নারীদের ব্যস্ততা।

চাটমোহর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নের মূলগ্রাম, ফৈলজানা, পার্শ্বডাঙ্গা, মথুরাপুর, ডিবিগ্রাম, হরিপুর, গুনাইগাছা, বিলচলন, হান্ডিয়াল, ছাইকোলা, রেলবাজার, মহরখালী, জগতলা, বেজপাড়া, আটলংকাসহ বিভিন্ন গ্রামের শত শত নারী এখন হাতের কাজ করে বাড়তি আয় করছেন। শাড়িতে জড়ি ও পুঁতি বসানোর কাজ করে সংসারে কিছুটা আর্থিক স্বচ্ছলতা আনার পাশাপাশি স্বাবলম্বী হচ্ছেন এসব নারী। সাংসারিক কাজের ফাঁকে ফাঁকে এই কাজ করছেন তারা। অভাবের সংসারে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে এমন অনেক কিশোরীও যুক্ত হয়েছে এই শিল্পের সঙ্গে।

আবার স্বামীহারা অনেক নারী থেমে যাওয়া সংসারের চাকা সচল করতে নেমে পড়েছেন এই কাজে। তাদের নকশা করা হাজার হাজার শাড়ি প্রতি সপ্তাহে চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরের অভিজাত বিপণী বিতানগুলোতে। সেখানে প্রতিটি শাড়ি বিক্রি হয় ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি শাড়িতে হাতের কাজ করতে সময় লাগে কমপক্ষে ৫ দিন।

অমৃতকুন্ডার আদরী ও তানিয়া বেগম জানান, সামনে ঈদ আসতেছে তাই কাজের চাপ বেশী। ঈদের জন্য বেশি টাকার প্রয়োজন তাই ছেলে-মেয়ে নিয়েই জড়ি পুঁতির কাজ করছি।

হরিপুরের জড়ি-পুঁতির কাজ শাপলা খাতুন, রুমকি, সাজেদা, সাথি, জায়দা, চায়না বলেন, এ কাজে যে পরিশ্রম, সে অনুযায়ী মজুরি কম দেওয় হয়। তবে বসে না থেকে সংসারের প্রয়োজনেই এ কাজ করছি।
জগতলা গ্রামের আশরাফ আলী জানান, সংসারে অভাব, তাই স্ত্রী এ কাজ করছেন। তবে উপযুক্ত পারিশ্রমিক পাওয়া গেলে সংসারে স্বচ্ছলতা আসতো।

উপজেলার মহরখালীর আলহাজ্ব মো. ফয়সাল হোসেন ও রেলবাজারের মো. সেতু ঢাকা থেকে এসব কাজ নিয়ে এসে এলাকার দরিদ্র নারীদের দিয়ে টাকার বিনিময় কাজ করিয়ে নেন। তারা শাড়িতে নকশার সিল বসিয়ে পাঠিয়ে দেন উপজেলার ওই নারী কর্মীদের কাছে। নারীরা সেই শাড়িতে নিপুণ হাতে জড়ি ও পুঁতি বসান। কাজ শেষে শাড়ি চাটমোহর থেকে আবার ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে পাঠানো হয় বিক্রির জন্য।

(এসএইচ/জেএ/জুলাই ২৩, ২০১৪)