রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ : ভালো নাম মহিদুল ইসলাম মাহী। এলাকার লোকজন, বন্ধুবান্ধব ছেলেটাকে নকল কুমার বলে ডাকতেন। অতি সহজেই পাড়াগ্রামের মঞ্চে, স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সঙ্গীতশিল্পি নকুল কুমার বিশ্বাসের গানগুলো অবলীলায় গেয়ে ফেলতেন তিনি।

লেখাপড়ায় মনোযোগী ছেলেটি স্কুল জীবনে কখনোই দ্বিতীয় হয়নি, ছিলেন প্রথম। একজন ভাল ছাত্র হওয়ার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে তার ছিল অসাধারণ প্রতিভা। ছোটবেলা থেকেই জেলার আঞ্চলিক পত্রিকা ‘মাথাভাঙ্গা’তে কবিতা লিখতেন। লিখতেন গান, নাটক। স্কুলের বন্ধুদেরকে নিয়ে সেই নাটকে অভিনয় করে কুড়িয়ে নিতেন সবার প্রশংসা।

২০০৫ সালে চুয়াডাঙ্গা অনূর্ধ্ব ১৭ ক্রিকেট দলে খেলার সুযোগও পেয়েছিলেন অনেক গুণে গুণান্বিত এই কিশোর ছেলেটি।

২০০৭ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচ.এস.সি. এবং পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে তিনি একজন সরকারী কর্মকর্তা। সরকারি চাকুরিতে কর্মরত থেকেও তিনি গানটাকে ধরে রেখেছেন আগের মতোই। হাজারো কাজের মাঝে ভুলে যাননি লেখালেখির অভ্যাস। গঠন করেছেন ভিন্ন সুর ও ধারার একটি গানের দল ‘ভিন্ন’। সেই গানের দলে তিনি প্রতিভাবানদের স্বাগত জানান সানন্দচিত্তে।

চাকুরির পাশাপাশি ’ভিন্ন’ ব্যান্ডের সদস্যদের দ্বারা গঠিত ‘VINNO PRODUCTION’এর একজন সম্মানিত উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতে পেরে তিনি গর্ববোধ করেন। বর্তমানে মাহী নিজের লেখা ও সুরের কিছু মৌলিক গানের কাজ নিয়ে স্টুডিও বেশ ব্যস্ত। অফিসিয়ালি কোন গান প্রকাশ না করলেও এটিএন বাংলার ইয়াং নাইট, নতুন সময়ের গানে গানে আড্ডা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কনসার্ট ও তার ফেসবুক টাইমলাইনের মাধ্যমে - “একশো বিঘা জমিনে থাকবে বাড়ি মাঝখানে, তুমি হবা রাণী”, “করি নাই সাধন , করি নাই ভজন” ,“ভিন্ন আমি , ভিন্ন তুমি, ভিন্ন মোদের চেহারা; ভিন্ন দেখ চাল চলনে কণ্ঠস্বরও মেলেনা” ,“এই দুনিয়ায় আসিয়া, এপাশ ওপাশ দেখিয়া – মনের ভিতর ভয় ঢুইকাছে”, “মাতাল এ মন করে নিত্য ভ্রমণ”, “আজকের পোলাপান কাছে এসে শুনে যান”, “কাছেতে এসে, পাশেতে বসে , আমাকে কিছু বলে যাও”, “তোমায় যদি পাইতাম আদর করে বসাতাম, ভালবেসে বাবা কত কথা বলতাম” ইত্যাদি গানগুলো এখন তার ভক্তদের মুখে মুখে।

মাহী সঙ্গীত একাডেমি দিতে চান। যেখানে গবেষণা করা হবে সুর, তাল এবং লয়ের। বাংলা সঙ্গীতকে নিয়ে যেতে চান অনেক দূর। যেহেতু সঙ্গীতকে তিনি বাণিজ্যিকভাবে গ্রহণ করেননি সেহেতু সবার ভালবাসা পেলে সঙ্গীত নিয়ে তিনি যে স্বপ্ন দেখেন তা পূরণ হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।