রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পূর্বাঞ্চলের মধুমতি নদী পাড়ের ইতনা ইউনিয়নের বিরোধপূর্ণ  চরদৌলতপুর গ্রাম। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, পূর্ব শত্রুতা ও তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামে ঘটে চলেছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। হামলা-মামলায় জর্জরিত এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষজন।

আদালতে দু’পক্ষের ৩৩টি মামলায় ৫৯৭ জন আসামী। শুধু তাই নয়, এই গ্রামের ৮৯ জনের নামে স্থানীয় থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। রাতে পুলিশের ভয়ে কেউই বাড়ি থাকে না। ঘুমোতে হয় আত্মীয়ের বাড়ি অথবা বাগানে। ২০০৯ সাল থেকে চলে আসা বিরোধ গত ৫ বছর সংঘাতে রূপ নেয়। দু’পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় ছানোয়ার মোল্যা স্থায়ী ভাবে পঙ্গুত্ববরণ করেছে। আহত হয়ে ক্ষত চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন শতাধিক মানুষজন।

এই গ্রামের বিরোধ নিরসনে নড়াইলের পুলিশ সুপার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সম্প্রীতির বন্ধন রচনার লক্ষে দু’পক্ষের মাতব্বরদের সাথে আলোচনার এক পর্যায়ে গত শনিবার (২মার্চ) সকাল ১০টায় স্থানীয় স্বরসতি একাডেমী মাঠে উভয়পক্ষের লোকজন নিয়ে বসেন মিমাংসার জন্য। লোহাগড়া উপজেলা আ’লীগের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট দৌলত আহম্মেদ খানের সভাপতিত্বে এবং ইতনা ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ইমদাদুল হক সুনু’র পরিচালনায় সম্প্রীতির বন্ধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন (পিপিএম), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরফুদ্দিন, উপজেলা আ’ লীগের সভাপতি শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী, ইতনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান টগর, সাবেক চেয়ারম্যান শিকদার মুনির আহম্মেদ মন্টু, সাবেক চেয়ারম্যান শেখ মনিরুজ্জামান, শেখ শিহানুক রহমান, ইতনা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক শেখ আহাদুজ্জামান, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রকাশ কুমার বিশ্বাস ও বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী ।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, নড়াইল জেলার বিভিন্ন গ্রাম গ্রাম্য কোন্দলে জর্জরিত। আমি ইতিপূর্বে অনেক এলাকার বিরোধ মিমাংসা করেছি। আশা করি চর-দৌলতপুর গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের বিরোধ নিরসনের মধ্য দিয়ে তারা আগামী দিনে শাপিূর্ণভাবে বসবাস করবে। কোন পক্ষ বিশৃঙ্খলা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে।

(আরএম/এসপি/মার্চ ০১, ২০১৯)