নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রাইগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন থেকে  প্রধান শিক্ষক পদটি শুন্য রয়েছে। এতে করে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্থবির হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন সকল কর্মকান্ড।

জানা গেছে, বিগত ১৯৩০ সাল থেকে অত্র অঞ্চলের মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠ। প্রতিদিন এই বিদ্যালয়ে প্রায় ১২শ’ শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করে। নিভৃত পল্লী এলাকার অনেক মানুষ এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আলোকিত করেছে দেশের বিভিন্ন অঙ্গনকে। কিন্তু বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জড়িত বিদ্যালয়টি যেন মুখ থুবড়ে পরার উপক্রম। বিগত ২০১৭ সালের নবেম্বর মাস থেকে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ক্রমশঃ অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে বিদ্যাপীঠটি।

ওই বছরেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা বেগম। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ২০১৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনের মেয়াদ ছিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ১৫ দিন। আর ওই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের মেয়াদ ছিল ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু আজ পর্যন্ত নানা জটিলতার কারণে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। যার ফলে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাদিতা জামান ও ইশরাত জাহানসহ অনেকেই জানায়, দীর্ঘ এক বছর পার হলেও আমরা অভিভাবকহীন অবস্থায় রয়েছি। প্রধান শিক্ষক না থাকায় একজন অভিজ্ঞ শিক্ষকের পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। প্রধান শিক্ষক না থাকায় অন্যান্য শিক্ষকরা গুরুত্ব সহকারে পাঠদান করায় না। এতে করে শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়েছে। বিদ্যালয়ে দ্রুত একজন অভিজ্ঞ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে পাঠদানসহ অন্যান্য সকল কর্মকান্ডকে ত্বরান্বিত করা হোক এটাই তাদের দাবী।

অভিভাবক রিপন হোসেনসহ অনেকেই বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সকল নির্দেশনাকে মেনে না চলার কারনে বিদ্যালয়ের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহতসহ অভ্যন্তরীন কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়টি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা বেগম বলেন, ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সব কাজ করা সম্ভব হয় না। অন্যান্য শিক্ষকরাও সব নির্দেশ পুরোপুরি মানতে চায় না। এতে করে বিদ্যালয়ের পাঠদান থেকে শুরু করে অনেক কাজই বর্তমানে স্থবির হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে দ্রুত অভিজ্ঞ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করায় প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ হয়নি। তাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি। ম্যানেজিং কমিটি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে চুড়ান্ত ভুমিকা রাখলে এ সমস্যা থেকে দ্রুত উত্তরন পাওয়া সম্ভব।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সামসুজ্জামান বলেন, আভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। তবে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

(বিএম/এসপি/মার্চ ০৩, ২০১৯)