মানিক সরকার মানিক, রংপুর : গত দুইদিনে টানা বৃষ্টিতে রংপুর অঞ্চলের নিচু আলু জমিতে পানি জমায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। হঠাৎ করে বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ার অধিকাংশ জমিতে পানি জমে আছে। ফলে কৃষকরা মাঠ থেকে তোলা আলু ঘরে নিয়ে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। আবার জমিতে পানি জমে থাকার কারণে আলুতে পচন ধরতে পারে এমন আশঙ্কায়ও ভুগছেন কেউ কেই। এ অবস্থায় আলুর দাম কমে যেতে পারে বলেও ধারণা কররেছন কেউ কেউ। 

রংপুরের কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, গত দু’দিনের বৃষ্টির কারণে এসব জমির অধিকাংশ এলাকাতেই পানি জমেছে। কৃষকরা কয়েক দিন ধরে জমি থেকে আলু উঠানোর পর তা শুকানোর জন্য জমিতেই সারি সারি ফেলে রেখেছেন।

শুকানোর পর আলু মাঠ থেকে নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করবেন এমনটাই আশা ছিল তাদের। কিন্তু হঠাৎ করে এই বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে থাকায় তাদের সব আশা নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে পানি থাকা অবস্থায় তারা আপাতত আলু মাঠ থেকে তুলতে পারছেন না। দু'একদিনের মধ্যে যদি মাঠ থেকে পানি নেমে না যায় এবং আলু তুলতে না পারেন তাহলে ইরি রোপণের সময়ও পেরিয়ে যাবে বলে অনেকেই আশংকা করছেণ। ভুগছেন।

কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর গ্রামের আলু চাষি হায়দার আলী, চরতচুরা গ্রামের আবেদ আলী নব্দীগঞ্জের শিহর আলাম জানান, তারা প্রত্যেকে এ বছর ৫ থেকে ৬ বিঘা করে জমিতে আলু লাগিয়েছেন। ইতিমধ্যে আলু উঠিয়ে তা বিক্রিও করেছেন। বাকি আলু এখনও জমিতেই আছে। পানি জমে থাকার কারণে সেগুলো আপাতত আনা যাচ্ছে না। যদি আরও বৃষ্টি হয় তাহলে আশা ছেড়ে দিতে হবে। কারণ পানি জমে থাকলে আলুতে পচন ধরে। তখন সেগুলো স্টোরেও রাখা যাবে না। আবার বিক্রি করতে চাইলেও কেউ নেবে না। এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বাজারে দাম ভালো হলেও আকাশের যে অবস্থা তাতে কী যে হয়, তা বলা যাচ্ছে না।

তবে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ আঞ্চলের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে বৃষ্টি নামতে পারে তা আগাম জানতে পেরে এলাকার কৃষকদের জানিয়ে দিয়েছি। আর এ বৃষ্টিতে তেমন ক্ষতি হবে না বলেও জানান তিনি।

রংপুর কৃষি অঞ্চলের ৫ জেলায় চলতি বছর ৯২ হাজার ৬’শ ৪০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২১ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন।

(এমএস/এসপি/মার্চ ০৩, ২০১৯)