হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : ঢাকা-সিলেট রেলপথের হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া রেলস্টেশনের অদূরে ট্রেনে কাটা ৩ যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সকাল ৯টায় নোয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশন প্লাটফর্ম এর প্রায় ২০০ গজ উত্তর দিক থেকে শায়েস্তাগঞ্জে রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে।

উদ্ধারকৃত লাশের মধ্যে ২ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলো মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া রেলস্টেশন সংলগ্ন বেঙ্গাডুবা গ্রামের মৃত রহিছ আলীর ছেলে শাহীন মিয়া উরফে শিপলু (৩৫) ও একই গ্রামের নান্নু মিয়ার ছেলে গোটলা মিয়া (২৮)। অন্যজনের মৃতদেহ ক্ষত বিক্ষত হয়ে পড়ায় তাকে সনাক্ত করা যায়নি।

নোয়াপাড়া স্টেশন মাস্টার মতিউর রহমান জানান, সকালে স্থানীয় লোকজন স্টেশন প্লাটফর্মের প্রায় ২০০ গজ উত্তরে খাদ্যগুদামের পাশে ৩ যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। তারা শায়েস্তাগঞ্জে রেলওয়ে পুলিশকে খবর দিলে এসআই ওসমান গনির নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ৩টি মৃতদেহ উদ্ধার করে।
ট্রেনে কাটা পড়ায় লাশগুলো রেলওয়ে ও থানার লোকজন বস্তাবন্দি করে নিয়ে আসে স্টেশনের প্লাটফরমে। পরে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয় হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে।

এই লাশ নিয়ে এলাকায় চলছে নানা আলোচনা। অনেকেই বলছেন, নিহত যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা মাদকাসক্ত এবং সবসময় স্টেশনের আশপাশেই থাকতেন। তারা চুরি ছিনতাইয়ের সাথেও জড়িত। রাতে হয়তো তারা অতিরিক্ত নেশা করে রেল লাইনে ঘুমিয়ে ছিল। ফলে ট্রেন আসায় তারা বুঝতে পারেনি। আবার কেউ বলছেন রাতে হয়ত কোথাও চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে, তাদেরকে মেরে লাশ ট্রেন লাইনে ফেলে দেয়া হয়েছে।

শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ওসমান গনি জানান, কিভাবে এই ঘটনা ঘটেছে তার কোন ধারণা পাওয়া যায়নি। তারা গিয়ে দেখেছেন লাশগুলো ট্রেনে কাটা। ময়নাতদন্তে সঠিক কারণ পাওয়া যাবে। তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে নোয়াপাড়া স্টেশন মাস্টার মতিউর রহমান বাদী হয়ে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন।

বেঙ্গাডুবা গ্রামের বাসিন্দা ও নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌকিদার হরমুজ আলী জানান, যে দুইজন মারা গেছে তারা আমার গ্রামের বাসিন্দা। এরা যে নেশা করত এটা সবাই জানে। তারা সব সময় রেলস্টেশনে আসত।
স্টেশন মাস্টার মতিউর রহমান জানান, ধারণা করা হচ্ছে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী ৭২৪ উদয়ন ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়না তদন্ত ছাড়া সুনির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলা যাবে না।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাছেত জানান, নিহতরা খারাপ প্রকৃতির লোক। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আসলে তদন্ত ছাড়া কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে স্থানীয় লোকজন বলেছে তারা খারাপ কাজের সাথে জড়িত।

(পিডি/জেএ/জুলাই ২৩, ২০১৪)