সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : পুলিশের এস.আই পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার দশম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার লিটন নামের এক যুবক। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ওই স্কুল ছাত্রীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেন্দুয়া এনে লিটন তার অপর সহযোগি বন্ধু সাইদুলকে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ওই ছাত্রীটিকে।

এ ঘটনায় পুলিশের এস.আই পরিচয়দান কারী প্রতারক লিটন ও তার সহযোগি সাইদুলের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধর্ষিতা ছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত প্রতারক লিটন মিয়াকে গ্রেফতার করে ৪ মার্চ সোমবার নেত্রকোনা আদালতে পাঠিয়েছে। আদালতের বিচারক লিটনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে ধর্ষিতা ছাত্রীর ডাক্তারী পরিক্ষা করার পাশাপাশি আদালতে ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট ধর্ষনের ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছে।

কেন্দুয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: রফিকুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যার পর মামলার এজাহারের উদৃতি দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ওই স্কুল ছাত্রীটির সঙ্গে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়নের দিগর সহিলাটি গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে লিটন নিজেকে পুলিশের এস.আই শাহজাহান কবীর নামে পরিচয় দিয়ে প্রায় ২ মাস আগে থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত ২ মার্চ লিটন ওই ছাত্রীটিকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে তার এলাকায় আসতে বলে। প্রতারক প্রেমিকের খপ্পরে পরে ছাত্রীটি ওই দিনই ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে। রাত ৮ টার দিকে ময়মনসিংহের ব্রীজ এলাকা থেকে ছাত্রীটিকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে লিটন। এসময় তার কথা বার্তায় সন্দেহ হলে লিটন নিজেকে এস.আই শাহজাহান কবীরের ভাতিজা বলে পরিচয় দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।

রাত প্রায় ১১টার দিকে লিটন তার বাড়ির পেছনে মুকন্দবাদ গ্রামের জমত আলীর পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে লিটন ও সাইদুল দুজনে মিলে ওই ছাত্রীটিকে পালাক্রমে ধর্ষন করে। ধর্ষনের পর লিটন ওই ছাত্রীটিকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় গ্রাম শালিশের বৈঠকে ছাত্রীটিকে তার বাবার বাড়িতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু এরই মধ্যে ৯৯৯ মাধ্যমে কেন্দুয়া থানা পুলিশ ঘটনাটি অবগত হয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ।

পরিদর্শক তদন্ত রফিকুল ইসলাম আরো জানান, ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের সময় ধর্ষনে অভিযুক্ত লিটনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরদিকে লিটনের বন্ধু সাইদুল গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছে। তবে লিটন ও তার সহযোগি সাইদুল এধরনের অপরাধমূলক আরো ঘটনা ঘটিয়েছে বলে এলাকাবাসী পুলিশকে জানিয়েছে।

(এসবি/এসপি/মার্চ ০৪, ২০১৯)