নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ সঞ্চয় অফিসে বিনিয়োগকারীদের হয়রানী চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিগত তিন- চার মাস ধরে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা পরিশোধ করতে কর্ত্তৃপক্ষের নানা অনিয়ম আর অবহেলার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। 

গত ৪/৫ দিন ধরে এই অবস্থা আরও বেড়ে গেছে। মার্চ মাসের শুরু থেকে বিনিয়োগকারীদের কোন মুনাফাই প্রদান করা হচ্ছেনা। ফলে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা না পেয়ে নিদারুন দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। কর্ত্তৃপক্ষের দাবী প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘœ হওয়ায় তারা মুনাফা দিতে পারছে না।

জানা গেছে, নওগাঁ জেলা সঞ্চয় অফিস/ব্যুরোতে বর্তমানে ২৫ হাজারেরও বেশী বিনিয়োগকারী। মাসিক ভিত্তিতে, ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সেখান থেকে তাঁদের মুনাফা উত্তোলন করে থাকেন। প্রতিদিন ৩ থেকে ৪শ’ বিনিয়োগকারী এই অফিসে মুনাফা উত্তোলনের জন্য আসেন। বিগত ৩/৪ মাস থেকে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদাসীনতার কারনে ঠিকমত তাঁদের মুনাফ উত্তোলন করতে পারছেন না। শেষ পর্যন্ত মার্চ মাসে এই কার্যক্রম একেবারে বন্ধ হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে গত ৫/৬ দিন থেকে মুনাফার কুপন ইস্যু একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিদিন বিনিয়োগকারীরা অফিসে এসে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। মুনাফা না পেয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। সংসারের খরচ সংকুলান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। কেবলমাত্র নওগাঁ জেলার বিনিয়োগকারীরাই নয়। এ জেলার ১১টি উপজেলা ছাড়াও রাজশাহী, বগুড়া, এমন কি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিনিয়োগকারীরা এই অফিসে সঞ্চয় করেছেন। তাঁরা এসে মুনাফা না পেয়ে মারাত্মক হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।

অপরদিকে এ দপ্তরের উচ্চমান সহকারী হাসান আলীর দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে বিক্ষুব্ধ অনেক বিনিয়োগকারী। সব সময় ছোট খাট বিষয় নিয়ে এই উচ্চমান সহকারী বিনিয়োগকারীদের ভর্ৎসনা করে থাকেন যা তাঁদের জন্য খুবই অপমানজনক। এই প্রতিষ্ঠানে যাঁরা বিনিয়োগকারী তাঁদের অধিকাংশই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারী। তাঁদের সকলেরই বয়স ৬০ বছরের বেশী। এই অবস্থায় সঞ্চয় বিভাগের এই অশোভন আচরন মেনে নেয়া অনেকের পক্ষেই কষ্টদায়ক।

বিনিয়াগকারীদের চরম দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে একমাত্র জনবলের সংকটকেই দায়ী করেন জেলা সঞ্চয় অফিস/ব্যুরোর সঞ্চয় কর্মকর্তা মোঃ নাসির উদ্দিন। তাঁর মতে এই দপ্তরের ৫ জন কর্মকর্তার পদ থাকলেও কাজ করছেন মাত্র দু’জন। অফিস সহায়ক গত তিন মাস ধরে অফিসকে না জানিয়ে লাপাত্তা। উচ্চমান সহকারী কয়েকদিন ধরে অসুস্থতা দেখিয়ে ছুটির দরখাস্ত পাঠিয়ে দিয়েছেন। আর মাত্র দু’জনের পক্ষে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।

অবিলম্বে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে প্রয়োজনীয় দক্ষ লোকবল পদায়ন করে উদ্ভুত পরিস্থিতির নিরসন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

(বিএম/এসপি/মার্চ ০৬, ২০১৯)