রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সরকারি হাসপাতালের এ্যম্বুলেন্স ও অক্সিজেন না পাওয়ার ফলে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের ঘোড়াপোতা গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, গত রোববার সকাল ৯টার দিকে তিনি তার অন্তঃস্বত্বা স্ত্রী রাবেয়া খাতুনকে (২০) সন্তান প্রসবের জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে ভর্তি করান। সন্ধার পর দু’টি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট দিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ প্রবীর কুমার মুখার্জী। প্রসব বেদনা ওঠায় রাবেয়াকে রাত ১১টার দিকে আবারো ওই স্থাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। সোমবার ভোর ৫টার দিকে ডেলিভারি করাতে কষ্ট অনুভব করায় তাকে এ্যম্বুলেন্সে করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন।

মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের এ্যম্বুলেন্স চালক বাচ্চু মৃধা ভাড়ায় বাহিরের রোগী নিয়ে ঢাকায় যাওয়ায় রাবেয়াকে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জোরপূর্বক ডেলিভারি করান। এর পরপরই নবজাতকের (পুং) শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় তাকে অক্সিজেন দেওয়ার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়। তবে স্বাস্থ্য কর্মী (এফডাব্লুভি) দীপাঞ্জলী সরকার ও সুপ্রীতি স্বর্ণকার জানান যে অক্সিজেন নেই।একপর্যায়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অক্সিজেন সিলিণ্ডার না থাকায় সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ওই নব জাতকের মৃত্যু হয়।

এদিকে কালিগঞ্জ উপজেলা মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের পাশ্ববর্তী বাসিন্দা সামছুর রহমান, আব্দুল ওয়াহেদসহ কয়েকজন জানান, বাহিরের ভাড়ায় এ্যম্বুলেন্স নিয়ে জেলার বাহিওে যাবে আর অক্সিজেন অভাবে নবজাতক মারা যাবে এটা মানা যায় না। প্রায়ই এ ধরণের ঘটনা ঘটছে দাবি করে তারা বলেন, এ ধরণের হাসপাতালের অক্সিজেন না থাকা ও এ শিশুটির প্রাণ কেড়ে নেওয়ার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

জানতে চাইলে কালিগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের এ্যম্বুলেন্স চালক বাচ্চু মৃধা জানান, প্রতিষ্ঠানের এ্যম্বুলেন্স নিয়ে জেলার বাইওে যাওয়ার কোন নিয়ম না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, এ ধরণের রোগী আসবে তা তিনি বুঝতে পারেননি।

কালিগঞ্জ মাও শিশু কল্যান কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ প্রবীর কুমার মুখার্জী বলেন, ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি পত্রিকায় লিখবেন না।

(আরকে/এসপি/মার্চ ০৬, ২০১৯)