মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকায় সাহেবালী মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তির খুনের ঘটনার জের ধরে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে দুই ইউনিয়নের সহাস্রাধিক মানুষ প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এছাড়াও এই এলাকার দুটি বাজারও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এই এলাকার নারী ও শিশুরা রয়েছে চরম আতঙ্কের মাঝে। ঘটনার পর মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুদ্দিন গিয়াস ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।

সরেজমিন, স্থানীয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আকনের সাথে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একই এলাকার সাহেবালী মাতুব্বরের বিরোধ চলে আসছিলো।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকায় সাহেবালী মাতুব্বরের উপর দুবৃর্ত্তরা হামলা চালিয়ে তাকে খুন করে।

ঘটনার পর কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয় আরো ১০/১৫ জনকে। মামলার পর থেকে সদর উপজেলার পাঁচখোলা ও কালিকাপুর ইউনিয়নের সহস্রাধিক মানুষ মামলা হামলার ভয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এই সুযোগে প্রতিপক্ষের লোক জন দফায় দফায় হামলা চালিয়ে বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সরোয়ার বেপারী, ইয়াকুব মিয়া, সেলিম মাতুব্বর, ওবায়দুল মাতুব্বর, দেলোয়ার মাতুব্বর, আউয়াল মাতুব্বর, নজরুল মাতুব্বর, জসিম মাতুব্বর, শহিদুল ইসলাম, হেমায়েত মোল্লা, বাবুল হাওলাদার, খালেক আকনের বাড়িসহ কমপক্ষে অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজার এবং পাঁচখোলা ইউনিয়নের আনন্দবাজার নামে দুটি বাজার ছিলো। খুনের ঘটনার পরে বাজার দুটি নিশ্চহ্ন হয়ে গেছে। বাজারে দোকারপাটের কোন অস্থিত্ব নেই। রাস্তার পারে দোকানের কয়েকটি খুটি দাড়িয়ে আছে। জনমানবশূণ্য।

রহিমুন নেছা নামে এক বৃদ্ধা বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশ থাকে। আমরা মাইর কাইজ্জা মধ্যে নাই। তবুও রাতে আমাগো বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে মোবাইলসহ মুল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। আসে পাশের অনেকের বাড়ি ঘরে লুটপাট করেছে। পুলিশও হামলাকারীদের পক্ষ নেয়। যারা খুনের সাথে জড়িত তাদের বিচার করুক। আমাদের মত নিরীহ মানুষের বাড়ি ঘর কেন ভাঙচুর- লুটপাট করে।’

মাদারীপুর সদর থানার সেকেন্ড অফিসার এবং মামলা তদন্ত কর্মকর্তা বারেক করিম খান বলেন, ‘আমার চেষ্টা করছি দুই পক্ষকেই শান্ত রাখার। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাকা গুলিও চালানো হয়েছে। ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থরা চাইলে মামলা করতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের আইনগত সব ধরণের সহায়তা প্রদান করবো।’

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি দুঃখজনক।’

(এএসএ/এসপি/মার্চ ০৭, ২০১৯)