বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের ভণ্ড পীর নুর মোহাম্মদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে খানকা সংলগ্ন এলাকাবাসীসহ ১০ গ্রামের বাসিন্দারা।

বুধবার দুপুরে বাগেরহাট-রূপসা মহাসড়করে খানকার সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিল রনবিজয়পুর, সিংড়া, কাঠাল, দেওয়ানবাটী, পাটরপাড়া, সুন্দরঘোনা, দশানী, খান জাহান আলী মাজার, পচাদিঘীসহ ১০ গ্রামের বাসিন্দারা।

এসময় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মো. সাইফুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান বাবুল, রনজিদা বেগম, হাজেরা বেগম প্রমুখ। বক্তারা ভণ্ড পীর নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, গত ২৫ বছর ধরে খানকায় স্থাপিত মসজিদে এলাকাবাসীদের নামাজ পড়তে বাধা দেওয়া হয়। মসজিদে খানকায় অধ্যায়নরত এতিম ও পীরের কিছু মুরিদ ছাড়া নামাজ আদায় করতে পারেন না। সেখানে কেউ গেলে তাকে জোর করে বের করে দেওয়া হয় ও বিভিন্ন ধরনের ভয় ভীতি দেখানো হতো।

তারা অভিযোগ করেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর কিছু সময়ের জন্য মসজিদের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হত । নুর মোহাম্মদ তার খেয়াল খুশি মত নামাজ পাড়াতেন। যেখানে জুমার নামাজ দুপুর ২টার ভেতর শেষ হয় অন্যান্য মসজিদে, সেখানে নুর মোহাম্মদ ৩ টা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে নামাজ শুরু করতেন।

এছাড়া এলাকার মানুষ খানকার ভেতর হতে পানি আনতে চাইলে সব সময় বাধা দেওয়া হত। তাদের বিভিন্ন ধরনের ভয় ভীতি প্রদর্শন করা হতো। এসময় এতিম শিশুরা সাংবাদিকদের সামনে তাদের উপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন। এসময় এলাকাবাসী খানকা মসজিদটি সকলের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানান এবং নারী নির্যাতনকারী ভণ্ড হুজুরের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি করেন।

গত বৃহস্পতিবার সকালে বাগেরহাট শহরের আমলাপাড়াস্থ ভণ্ড পীরখ্যাত শেখ নুর মোহাম্মদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার দুই স্ত্রী ও চার সন্তানকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পর্দার দোহাই দিয়ে প্রথম স্ত্রীকে ৪১ বছরসহ অন্যদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে ঘরে তালা বন্দি করে রাখা হয়েছিল। ঘরে তালাবদ্ধ রাখায় ৩৫ বছরের অবিবাহিত মেয়েসহ সন্তানদেরকে পর্যন্ত সূর্য্যের মুখ দেখতে দেয়নি পীর দাবিদার নুর মোহাম্মদ। এ সময়ে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় নূর মোহাম্মদ।

পরবর্তীতে বাগেরহাটের সুশীল সমাজ সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নুর মোহাম্মদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে আসছে ।

(একে/জেএ/জুলাই ২৩, ২০১৪)