বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলায় আদালতের নিষধাজ্ঞা অমান্য করে পানি উন্নয় বোর্ডের ‘সিইআইপি’ প্রকল্পের বেড়িবাঁধ নির্মানে চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অন্যের ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র জমির মালিক দাবি করে চীনাদের কাছে মাটি বিক্রি করে দেয়। মূল মালিকপক্ষ নিষেধাজ্ঞার কাগজপত্র দেখিয়ে মাটি কাটতে বাধা দেওয়ার পরও ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকেরা মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছে। উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের দক্ষিণ কদমতলা গ্রামে আদারতের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে চলছে এই মাটি লুট।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের মোল্লা বাড়ির পেছনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এক্সক্যাভেটর দিয়ে বিশাল এক পুকুর খনন করা হচ্ছে। প্রায় এক একর জমিতে ১২ ফুট গভীর করে ওই মাটি কাটা হয়েছে। মাটি পরিবহনের জন্য ১০টি ট্রলিতে কওে সেই মাটি বেড়িবাঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মো. মেহেদী হাসান খান দোহার অভিযোগে জানা যায়, রায়েন্দা মৌজায় ছয়টি খতিয়ানের ১১টি দাগে তাদের ১০ দশমিক সাত একর জমি রয়েছে। ওই জমি থেকে দক্ষিণ কদমতলা এলাকার আলিমুল মোল্লা, শাহ আলম মোল্লা ও সরোয়ার মোল্লা গ্রুপ জমির কথিত মালিক সেজে সাড়ে তিন একর জমির মাটি চীনাদের কাছে বিক্রি করে দেয়।

এ ব্যাপারে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় বাগেরহাট আদালতের স্মরনাপন্ন হলে বিজ্ঞ আদালত গত ৭ মার্চ নালিশি জমিতে ফৌজদারী কার্যবিধি-১৪৪ ধারা জারি করে উভয় পক্ষকে আগামী ৩০ এপ্রিল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ আদালতের সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দ্রুতগতিতে মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছে।

এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষের মো. সরোয়ার মোল্লা জানান, আমাদের জমির মাটি আমরা চীনা ঠিকাদারের কাছে মাটি বিক্রি করেছি। আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানান, এব্যাপারে তারা নির্ধারিত তারিখে আদালতেই জবাব দেবেন।

‘সিইআইপি’ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী শ্যামল দত্ত বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আদলত এবং জমির মালিকের ব্যাপার। তারপরও আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখবো। শরণখোলা থানার ওসি দিলীপ কুমার সরকার বলেন, জমিজমার বিষয় আমরা কোনো সমাধান দিতে পারিনা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস বলেন, বিজ্ঞ আদালতের নিষধাজ্ঞা কেউ অমান্য করতে পারেন না। বাদির অভিযোগরে পরিপ্রেক্ষিতে বিবাদিদের হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ করা হয়েছিলো। সমাধান না হওয়ায় বাদি আদালতের স্মরনাপন্ন হয়েছেন।

(এসএকে/এসপি/মার্চ ১২, ২০১৯)