বরিশাল প্রতিনিধি : ঈদ উপলক্ষে স্টিমারের কেবিনের টিকিট পেতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন বরিশালের যাত্রীরা। রমজানের ঈদ, কোরবানীর ঈদ এলেই কেবিনের টিকিট কব্জা করেন বিআইডব্লিউটিসি’র ঢাকাস্থ উর্ধ্বতন কর্মকর্তরা।

তবে কেবিনের টিকিটের ভোগান্তির চেয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো শঙ্কিত যাত্রীরা, যাত্রা পথে স্টীমার যেন অচল না হয়। এনিয়ে শঙ্কার কোন কারণ নেই বলে জানালেন সংস্থার নির্বাহী প্রকৌশলী কমল কৃষ্ণ মিত্র। তিনি বলেন, তাদের বাড়তি টিমের পাশাপাশি উদ্ধারকারী জাহাজ রয়েছে। স্টীমার অচল হলেও যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন।

বিআইডব্লিউটিসি’র বরিশাল মহাব্যাবস্থাপকের অফিস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ঈদ উপলক্ষে এবছর ২৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ সার্ভিস চালু থাকবে। এরমধ্যে ঢাকা বরিশাল রুটে ৪টি এবং চাঁদপুর থেকে মোড়লগঞ্জ রুটে ২টি স্টিমার চলাচল করবে। এবারে ডেকের ভাড়া ১৭০ টাকা এবং কেবিনের ভাড়া সিঙ্গেল ১৩২০ এবং ডবল কেবিনের ভাড়া ২৩১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ যাত্রা এবং আর্থিক সাশ্রয় বলে যাত্রীরা স্টীমারে যেতে পছন্দ করলেও টিকিটের বিড়ম্বনায় তা সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানান মোক্তার হোসেন নামক সাবেক এক সংসদ সদস্য। তিনি আরো বলেন, স্টীমারের বেশীর ভাগ পুরানো। অপরদিকে সারা বছর বরিশাল অফিস থেকে টিকিট পাওয়া গেলেও পার্বণ এলেই টিকিট চলে যায় ঢাকার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হাতে। তারা পছন্দের লোকদের টিকিট দেওয়ার পর যদি থাকে তবে বরিশাল থেকে পাওয়া যেতে পারে।

টিকিট ক্লার্ক মো. জাফর উল্লাহ খান জানান, ২৫ জুলাইর পর ঢাকা থেকে নির্দেশ আসবে বরিশাল থেকে বুকিং নেওয়ার জন্য। তবে বেশীর ভাগ যাত্রীয় ফিরতি টিকিট আগাম ঢাকা থেকে নিয়ে থাকেন বলে তারা বরিশালের যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী টিকিট দিতে পারছেন না। তিনি আরো জানান, তারপরও তারা কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের জন্য বুকিং নিচ্ছেন। কতটা দিতে পারবেন তা নির্ভর করবে ঢাকা থেকে পাঠানো কোঠার উপর।

আ. রহিম নামক এক যাত্রী তার অভিজ্ঞতার বর্ণনায় বলেন, গতবারে স্টীমার যোগে বাড়ি ফেরার সময় মাঝপথে স্টীমারের ইঞ্জিন বিকল হলে ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল। এবারেও যাত্রীদের শঙ্কা স্টিমার পুরানো বলে যেকোন সময় তারা ভোগান্তিতে পড়তে পারে। এবারের স্পেশাল ৬টি জাহাজের মধ্যে প্যাডেল স্টীমার অস্ট্রিচ ও প্যাডেল স্টীমার মাহ্সুদ ৮৫ বছরের পুরানো। তেমনি করে প্যাডেল স্টীমার লেপচা ১৯৩৮ সালে নির্মিত। প্যাডেল স্টীমার টার্ন নির্মিত হয়েছে ১৯৫০ সালে এবং এমভি শেলার নির্মাণ সাল হচ্ছে ১৯৫১। এরমধ্যে কেবল বাঙালী এবছর নতুন নামানো হয়েছে। তবে বাঙালীর নির্মাণ ক্রটির কারণে ডেকে এবং কেবিনেও যাত্রীরা যেতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেনা বলে এটাতে যাত্রী কম হয়।

পুরানো স্টীমার যেকোন সময় যান্ত্রিক ক্রটি দেখা দিকে পারে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী কমল মিত্র। তারপরও এবার মেরামত করেই ৬টি স্টীমার ঈদ সার্ভিসে নামানো হয়েছে। এতে করে তিনি আশা করেন তাদের নিয়মিত টেকনিশিয়ানের পাশাপাশি দু’জন ইঞ্জিনিয়র সার্বক্ষনিক মাঠে থাকছেন যাতে করে কোন সমস্যা না হয়। অপরদিকে চাঁদপুরে তাদের উদ্ধারকারী জাহাজ থাকছে। নির্বাহী প্রকৌশলীর কথার সাথে একমত পোষণ করে সংস্থার ব্যাবস্থাপক গোপাল মজুমদার বলেন, সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার ফলে তারা আশা করছেন এবার ঈদে বাড়ি ফেরা এবং কর্মস্থলে যাওয়া যাত্রীরা নির্বিঘ্নে যাত্রা করতে পারবেন তাদের স্টিমার সার্ভিসে।

(বিএস/অ/জুলাই ২৪, ২০১৪)