প্রবীর সিকদার 


ফরিদপুর শহরে এখন রিক্সা নেই বললেই চলে! রিক্সার জায়গা দখল করে নিয়েছে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা। শহরের মানুষ স্বাচ্ছন্দে বরণ করে নিয়েছেন ওই ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সাকে; ভাড়া কম, আবার রিক্সার চেয়ে বেশি গতি। শহরে স্কুল কলেজে যাতায়াত, হাটবাজার করা, এমনকি হাসপাতালে রোগী আনা নেওয়ার কাজেও ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সার দারুণ কদর। অথচ হটাৎ করেই আজ জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা প্রশাসন স্বাচ্ছন্দের জনজীবনে জায়গা করে নেওয়া ওই ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন; তারা শহরে আর এই ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চলতে দিবেন না! আজ ওই ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা শহরে চলাচল করতে না পারায় ফরিদপুর শহরের নাগরিক জীবনে নেমে এসেছে মহা দুর্ভোগ। স্কুল কলেজে যাতায়াতকারী ছাত্র ছাত্রী, তাদের অভিভাবকদেরও ভোগান্তি চরমে। অফিস গামী ও অফিস ফেরত মানুষের বিপদও কম নয়! হাটবাজারে যাতায়াতেও সীমাহীন ভোগান্তি। ব্যবসা বানিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব এড়িয়ে যাওয়ার নয়।

হঠাৎ জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা প্রশাসন কেন ওই ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সার বিরুদ্ধে জেহাদে নামলেন, এই প্রশ্নের উত্তরে জানা গেল, শহরের যানজট নিরসনে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা উচ্ছেদে মরিয়া তারা! কিন্তু তারা একবারও ভেবে দেখলেন না ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সায় যাতায়াতকারী মানুষগুলোর দুর্ভোগের বিষয়টি কিংবা ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে যাদের জীবন চলে, এমন কয়েক হাজার পরিবারের বিড়ম্বনার বিষয়টি! ফরিদপুর শহরে যানজটের জন্য কম দায়ী নয় অটো টেম্পুগুলো! তার মানে ওই অটোটেম্পু চলাচল বন্ধ করে দিতে হবে? অবশ্যই নয়। আর সেই বিবেচনাতেই এখনো মফস্বল ধারার শহর ফরিদপুরে বন্ধ করা সমীচীন হবে না স্বল্প আয়ের মানুষের জনপ্রিয় বাহন ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সার চলাচল; সমীচীন হবে না ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদের জীবনে বিড়ম্বনা ডেকে আনা।

আমি আশা করবো, ফরিদপুর জেলা প্রশাসন ও ফরিদপুর পৌরসভা প্রশাসনের আজই শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং আগামীকাল থেকেই ফরিদপুর শহরে বিনা বাধায় চলাচল করবে স্বল্প আয়ের মানুষের জনপ্রিয় বাহন ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা, কোনো বিড়ম্বনায় পড়বে না কয়েক হাজার ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালকের পরিবার।

(পি/এসপি/মার্চ ১৪, ২০১৯)