শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরে নতুন নতুন কৃষিযন্ত্র অবিস্কার করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক ডাক্তার আনোয়ার হোসেন। এসব যন্ত্র ব্যবহার করে একদিকে যেমন কৃষি কাজে আর্থিক, সময় ও শ্রমের অপচয় কমছে। তেমনি বাড়ছে, ফসলের উৎপাদন ও দাম। কোন চালক ছাড়াই রিমোট কন্টোলের সাহায্যে জমিতে এসব যন্ত্রের সাহায্যে চাষাবাদ, ধান কর্তন, মাড়াই ও বস্তায় ভরার কাজ চলছে। এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে এসব কৃষিযন্ত্র।

কোন চালক ছাড়াই রিমোট কন্টোলের সাহায্যে জমিতে পাওয়ার টিলারের মাধ্যমে চাষাবাদ চলছে। পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টরের চাইতে এ যন্ত্রটি দিয়ে অতি দ্রুত ও ভালোভাবে চাষাবাদ হচ্ছে জমিতে। এ কৃষি যন্ত্র নিয়ে ব্যাপক সাড়া পড়েছে এ অঞ্চলে। তা দেখার জন্য দুর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষ।

এ যন্ত্রটি আবিস্কার করেছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের কৃষক ডা. আনোয়ার হোসেন। তার আবিস্কৃত চালক ছাড়াই রিমোট কন্টোলের সাহায্যে জমিতে পাওয়ার টিলারের মাধ্যমে চাষাবাদের যন্ত্রের নাম দেয়া হয়েছে,“আনোয়ার এক্সসেল পাওয়ার টিলার”।

ডা.আনায়ার হোসেন জানান, “কৃষি কাজে আর্থিক,সময় ও শ্রমের অপচয় কমাতে এবংস ফসলের উৎপাদন ও দাম বাড়াতে আমি আবিস্কার করছি এসব কৃষিযন্ত্র। আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নষ্ট বা ফেলে দেয়া মেশিন কিংবা ভাঙড়ির দোকানে অব্যবহত লোহা-লক্কর আর যন্ত্র দিয়েই আমি তৈরি করি কৃষিযন্ত্র। সহযোগিতা পেলে আমি আরো আগ্রসর হতে পারবো।”

এলাকার কৃষক মতিউর রহমান জানিয়েছেন, পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টরের যন্ত্রের সাহায্যে ডববল গিয়ার বক্স সম্পন্ন এ যন্ত্রটি রিমোট কন্টোলের সাহায্যে চলছে। সাধারণ পাওয়ার টিলার দিয়ে এক একর জমিতে চাষাবাদ করতে যেখানে ৬ থেকে ৭ লিটার জ্বালানী তেল( ডিজেল) লাগে সেখানে এ যন্ত্রটি দিয়ে এক একর জমিতে চাষাবাদ করতে জ্বালানী তেল( ডিজেল) লাগছে ৩ থেকে ৪ লিটার। শুধু এ যন্ত্রেই নয়, এমন অসংখ্য নতুন নতুন কৃষি যন্ত্র আবিস্কার করেছে ডা. আনোয়ার হোসেন। তার আবিস্কার এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তৌহিদুল ইকবাল জানিয়েছেন, ডাক্তার আনোয়ার হোসেনের আবিস্কৃত এসব কৃষি যন্ত্র নিয়ে ইতোমধ্যে মাঠ দিবসও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কৃষিবিদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ছুঁটে গেছেন তার আবিস্কৃত যন্ত্র দেখতে।

প্রশাসনও আশাবাদি ডা. আনোয়ার হোসেনের আবিস্কৃত এসব কৃষিযন্ত্র নিয়ে। দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম জানিয়েছেন, আমিও সরজমিনে গিয়ে দেখিছি ডা. আনোয়ার হোসেনের আবিস্কৃত কৃষিযন্ত্র। বেশ আশাবাদি আমি। তার উদ্ভাবিত কৃষিযস্ত্র এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। ব্যবহারো করছে অনেকে। দেশ ছেড়ে হয়তো একদিন তার উদ্ভাবিত কৃষিযস্ত্র বিদেশেও সাড়া ফেলবে।

পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ডাক্তার আনোয়ার হোসেনের নিত্য নতুন কৃষি যন্ত্র আবিস্কার অব্যাহত থাকবে এবং এসব যন্ত্র ব্যবহার করে দেশ এগিয়ে যাবে এমনটাই মন্তব্য করেছেন কৃষিবিদরা।

(এসএএস/এসপি/মার্চ ১৪, ২০১৯)