রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সময়মত হাসপাতালে না আসায় এলাকাবাসীর হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের দুইজন চিকিৎসক ও এক ঔষধ কোম্পানীর রিপ্রেজেনটেটিভ।শনিবার সকাল ৯টার দিকে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার সকালে শিশু হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী চালতেতলা গ্রামের জুলিয়া খাতুন ও কাটিয়া মাঠপাড়ার সামছুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের ঠিকমত সেবা না দেওয়া, ইচ্ছেমত হাসপাতালে আসাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে এখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জাকির হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে। চিকিৎসকের সকাল ৮টায় হাসপাতালে প্রবেশের কথা থাকলেও তারা নয়টা থেকে ১০টার আগে আসেন না। ফলে অসুস্থ বাচ্চাদের নিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। প্রাইভেট প্রাকটিস করার ফলে নির্ধারিত সময়ে তারা হাসপাতালে আসেন না বলে তাদের অভিযোগ।

শনিবার সকালে সাড়ে ৮ টায় হাসপাতালে গিয়ে দেখাযায় সেখানে কোন চিকিৎসক নেই। সকাল ৯ টায় হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা: জাকির হোসেন এক কোম্পানির একজন রিপ্রেজেনটেটিভ এর মোটর বাইকে হাসপাতালে আসেন। দেরিতে আসার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তার সাথে এলাকাবাসীর কথাকাটাকাটি হয়। তেড়ে আসায় ওই রিপ্রেজেনটেটিভকে লাঞ্ছিত করে জনৈক মনিরের নেতৃত্বে গ্রামবাসি। পরে সাড়ে ৯টার দিকে মেডিকেল অফিসার ডা: আব্দুর রাজ্জাক হাসপাতালে আসলে এলাকাবাসী তাকে সময়মত না আসার কারণ জিজ্ঞাসা করায় তিনি রাগান্বিত হয়ে হাসপাতালে ঢুকে চলে যান। সাথে সাথে ডা: জাকির ও হাসপাতাল থেকে চলে যান। এসময় ডাঃ জাকির কে রোগী দেখার জন্য অনুরোধ করলে তিনি কারো অনুরোধ রাখেননি। এদিকে দুই চিকিৎসকের এভাবে চলে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসার শত রোগী ও তার স্বজনরা।

শিশু হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী মোহাম্মদ আলী, নাজমা খাতুন, লিয়াকত হোসেনসহ কয়েকজন জানান, হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রত্যেকই স্ব স্ব চেম্বার নিয়ে ব্যস্ত। সময়মত কখনেই সেবা দেন না। প্রতিবাদ করলেই হাসপাতালে আসা পুরোপুরি বন্ধ করে দেন। ফলে গরিব অসহায় পরিবারের রোগীদের চমর ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা: জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সকাল ৯টায় ইনপেস্টা কোম্পানির জেলা ম্যানেজার আঃ জলিলের বাইকে করে তিনি হাসপাতালে গেলে সেখানে উপস্থিত থাকা মনি, মেহেদী ও বিঠুখানের নেতৃত্বে কয়েকজন ব্যক্তি তাদের ব্যবহৃত মোটর বাইকের গতিরোধ করে কোম্পানির জেলা ম্যানেজার আঃ জলিলকে মারপিট করে এবং তার সম্মান হানি করার চেষ্টা করে। তারপরও তিনি বহিঃবিভাগে রোগি দেখতে যান। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ডা: আব্দুর রাজ্জাক নিজস্ব প্রাইভেট কারে হাসপাতালে ঢুকতে চাইলে তাকেও ঢুকতে দেননি। যে কারণে তিনি হাসপাতাল ছেড়ে চলে আসেন।

মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুর রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য দুপুর ২.৩৯ মিনিটে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তা সম্ভব হয়নি।

(আরকে/এসপি/মার্চ ১৬, ২০১৯)