সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিক্ষামূলক ভাবে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান পদ্বতি চালু করলেও মামুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুধু নামেই চলছে অষ্টম শ্রেণীর বিদ্যালয়। 

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের মামুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৩ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাঠদান চালু হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক খান জানান, ২০১৫ সালে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা জে.এস.সি পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করে। কিন্তু ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানের জন্য আলাদা কোন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। বাড়ানো হয়নি অবকাঠামো। একাডেমিক ভবন সংকটের কারণে অনেক সময় খোলা আকাশের নিচে সামিয়ানা টানিয়েও ক্লাশ নিতে হয়। তাছাড়া যে সব প্রাথমিক শিক্ষকরা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন সেসব শিক্ষকদেরকে দেয়া হয়না বাড়তি কোন সুযোগ সুবিধা। দেয়া হয়না চক, ডাস্টার সহ শিক্ষা উপকরনের কোন খরচ। শুধুমাত্র বোর্ডের বই ছাড়া সরকারি ভাবে বাড়ানো হয়নি শিক্ষক, অবকাঠামো এবং বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ। এরকম নানাবিধ সমস্যার মধ্য দিয়েই ৪ শ ৫৮ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি। তবে বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক সহ ৮ জন শিক্ষক দ্বিগুণ পরিশ্রম করে শিক্ষার মান উন্নয়নে যথেষ্ঠ বলিষ্ট ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।

ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম জানান, ২০১৫ সালে উপজেলার মধ্যে বিদ্যালয়টি শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ের পুরষ্কার লাভ করে। ২০১৬ সালে জেলায় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো: দিদারুল ইসলাম শ্রেষ্ঠ সভাপতির পুরষ্কার পান। ২০১৮ সালে উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরষ্কার লাভ করেন প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক খান। কিন্তু সরকারি ভাবে বিদ্যালয়টির নামাকরনও পরিবর্তন করা হচ্ছেনা। বাড়ানো হচ্ছেনা অবকাঠামো ও শিক্ষকের সংখ্যা। গত কয়েকদিন আগে বিদ্যালয়ের সমস্যা জেনে অন্তত আরো ২ জন শিক্ষকের সংখ্যা বাড়াতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তাগিদ দেন নেত্রকোনা-৩ আসনের এম.পি অসীম কুমার উকিল।

এ ব্যাপারে শিক্ষা কর্মকর্তা মো: জিয়াউল হকের সাথে শনিবার যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খুব তাড়াতাড়িই দুই জন শিক্ষক বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তবে যে সব শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ে গেলে কোন আপত্তি থাকবে না সেরকম শিক্ষকই আমরা খুঁজছি।

মোজাফরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মো: দিদারুল ইসলাম দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীত করায় ছাত্র-ছাত্রী অনেক বেড়েছে, প্রতি বছর ভালো ফলাফলও করছে কিন্তু বাড়ানো হচ্ছেনা শিক্ষক, অবকাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। তিনি শিক্ষা বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দিপুমনির জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

(এসবি/এসপি/মার্চ ১৬, ২০১৯)