আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : নগরীর কলেজ রোড এলাকার পেস্কার বাড়ি থেকে অপহরণের প্রায় আড়াই মাস পরেও উদ্ধার হয়নি তিন বছরের শিশু দীপা রানী সমাদ্দার। দীপা কোথায় আছে বা বেঁচে আছে নাকি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে সেসব বিষয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ।

অথচ গ্রেফতার করা কথিত অপহরণকারীরা ১৬৪ ধারায় আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে স্বীকার করেছে যে, দীপাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখে দীপার বাবা বিনয় সমাদ্দারের কাছে মোবাইল ফোনে তারা ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিলো। সূত্রমতে, গত ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে শিশু দীপাকে তাদের বাসার সামনে থেকে অপহরণ করা হয়।

এ ঘটনার পরেরদিন দীপার বাবা একটি রেস্তোরাঁর কর্মচারী বিনয় সমদ্দার অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অপহরণের পর অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা মোবাইল ফোনে দীপার বাবার কাছে একাধিকবার কল ও ম্যাসেজ পাঠিয়ে ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। গত আড়াই মাসে দীপার হদিস না মেলায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বাড়ছে তার অভিভাবকদের মধ্যে। কন্যাকে অপহরণের পর থেকে দীপার মা চায়না সমাদ্দার শয্যাশায়ী।

বিনয় সমাদ্দার অভিযোগ করেন, প্রতিদিন পুলিশের কাছে যাই, তারা শুধু বলে দেখছি, র‌্যাবের কাছেও বহুবার গিয়েছি। আমরা গরিব, তাই আমার মেয়েকে উদ্ধারের ব্যাপারে কেউ গুরুত্ব দিচ্ছেনা।

দীপা অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইদুল হক জানান, দীপা অপহরণের পর প্রতিবেশী রাসেল খান ও তার ভাই সজীব খান এবং ফারুক ও আসাদুল হক নামের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা আদালতে দীপাকে অপহরণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে।

দীপার বাবা আরও বলেন, অপহরণের আগের দিন তারা বেসরকারী সংস্থা আশা থেকে ৩৬ হাজার টাকা ঋণ তুলেছিলেন। যা তার প্রতিবেশী রাসেল খান জানতো। আর ওই টাকার লোভেই দীপাকে অপহরণ করেছে তারা। বিনয় সমাদ্দার বলেন, পুলিশ অনেক জটিল ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে কিন্তু দীপার কোন সন্ধান দিতে পারছেন না।

অপহৃত দীপার বাবা-মায়ের অভিযোগের ব্যাপারে এসআই সাইদুল হক বলেন, দীপা অপহরণ মামলাটি চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে। দীপাকে উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। আসামিরা মুক্তিপণ চাওয়ার কথা স্বীকার করলেও দীপাকে অপহরণের বিষয়ে কোন তথ্য দিচ্ছেনা।

(টিবি/এসপি/মার্চ ১৯, ২০১৯)