বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ বাধাল গ্রামের শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে মোবাইল ফোনে পরকীয়ার জের ধরে স্বামীকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে এক নববধূ । 

ঘটনাটি ঘটেছে ২২ মার্চ বাসিন্দা নজির আহম্মেদ মৃধার বাড়িতে । ঘটনার পর শনিবার ভোরে আহত স্বামী রুমন মৃধাকে (২৮) আশংকাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে ।

শরণখোলা থানা পুলিশ ভোরে পালিয়ে যাবার সময় অভিযুক্ত নববধূ কুমকুমি আকতার শিমুকে (২৫) আটক করেছে। এঘটনায় রুমানের মা বাদি হয়ে শনিবার দুপুরে শরণখোলা থানায় পুত্রবধু কুমকুম আক্তার শিমুর নামে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বাদি আহত রুমানের মা রেনু বেগম জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ছেরের রুমে গোঙানির শব্দ শুনতে পান তিনি। বাউয়ের কাছে কিসের শব্দ জানতে চাইলে বলে বিড়ালে ঝগড়া বাধিয়েছে বলে জানায়। তখন তিনি তার স্বামী নজির মৃধা ঘুম থেকে উঠিয়ে রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন রুমানকে লেপ দিয়ে ঢেকে রেখেছে পুত্রবধু। ঘরের মেঝে ও বিছানা রক্তে ভেজা রয়েছে। লেপ সরিয়ে ছেলেকে গলা কাটা অবস্থায় দেখে তারা চিৎকার করতে থাকেন। আসপাশের লোকজন আসার আগেই ঘাতক স্ত্রী কুমকুম আক্তার শিমু ঘর থেকে বেরিয়ে পালিয়ে যায়।

রেনু বেগম জানান, তার ছেলে ‘গ্রুপ ফোর’ নামের একটি ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি করে। রুমান যশোরে কর্মরত অবস্থায় নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল এলাকার শেখ হারুন অর রশিদের মেয়ে কুমকুম আক্তার শিমুর সাথে মোবাইলে পরিচয় হয়। শিমু তখন ঝিনাইদাহে একটি বাইং হাউজে কাজ করতো। একপর্যায় তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় আট মাস আগে তারা নিজেরাই বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই শিমু তাদের বাড়িতেই থাকে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনোদিন ঝগড়াঝাঁটি হয়নি।
ছেলে বাড়িতে না থাকলে বউ গোপনে মোবাইলে কথা বলতো। তাদের ধারণা বউয়ে অন্য কারো সাথে সম্পর্ক আছে। তার ছেলেকে হত্যা করে বউ হয়তো অন্য প্রেমিকের সাথে যেতে চেয়েছিলো।

অপরদিকে, স্ত্রী কুমকুম আক্তার শিমু অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে তার স্বামী যৌতুৃকের জন্য তাকে মারধর করতো। নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামীকে জবাই করে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন।

শরণখোলা থানার বারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলপি কুমার সরকার জানান, ঘটনায় ছেলের মা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার একমাত্র আসামী স্ত্রী কুমকুম আক্তার শিমুকে পুলিশ রাতেই আটক করা হয়েছে। ঘটনার কারণ উদঘাটনে চেষ্টা চলছে।

(এসএকে/এসপি/মার্চ ২৩, ২০১৯)