বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলার বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপ) নির্মানাধিন পানি উন্নয় বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বগী এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার রাতে পুর্ণিমার প্রভাবে বলেশ্বর নদীর জোয়ারের তোড়ে প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ সম্পূর্ণ বিলিন হয়ে যায়। সাউথখালী ইউনিয়নের বগী গ্রামের নদী সংলগ্ন পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়িতে জোয়ারের পানি ঢুকে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ে মানুষ।

শনিবার দুপুরে ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে হু হু কওে পানি ঢুকছে। পুরো গ্রাম পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। বসতঘরে পানি ঢুকে যাওয়া মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্ম ও রান্নাবান্না করতে পারছেনা। গবাদি পশু নিয়েও তারা পড়েছেন বিপাকে।

এসময় মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম হাওলাদার (৭০), শায়সের আলী (৬০), আ. জলিল হাওলাদার (৬৫), সুফিয়া বেগমসহ দুর্ভোগের শিকার বগী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ শুক্রবার রাত ১২টার দিকে তারা ঘরের মধ্যে পানি দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সারা ঘুমোতে পারেননি তারা। গবাদি পশুগুলো আশপাশের উচু জায়গায় নিয়ে রেখেছেন। রান্নাবান্না করতে না পারায় বাজার থেকে শুকনা খাবার কিনে খেতে হচ্ছে তাদের।

সাউথখালীর ইউপি সদস্য মো. রিয়াদুল পঞ্চায়েত বলেন, প্রতিনিয়ত ভাঙছে বেড়িবাঁধ। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ভাঙন প্রবন বগী এলাকায় বেড়িবাঁধের কাজ না করে চায়নার ‘সিএইচডাব্লিউই’ নামের ঠিকাদারী সংস্থা কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করছে। ফলে বগী এলাকার হাজার হাজার মানুষ ও সহায় সম্পদ দিন দিন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বগী এলাকা বার বার ভাঙছে। বাঁধ নির্মানকারী ঠিকাদার কোনো গুরুত্ব নেই। এর আগেও বেশ কয়েকবার এখানকার বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা নামমাত্র রিংবাঁধ দিয়েই তাদের দায় সারেন। বাঁধ নির্মানের আগে এখানে নদী শাসন করা দরকার। ভাঙন রোধ হলে পরবর্তীতে বাঁধ তৈরী করলে সেটি টেকসই হবে। অন্যথায়, বাঁধ নির্মান করলে তা কোনো কাজে আসবেনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিইআইপি প্রকল্পের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ১৫দিনের মধ্যে ওই এলাকায় বাঁধ নির্মান কাজ শুরু করা হবে। এখানে রিং বাঁধ দিলে তা কোনো কাজে আসবে না। প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় নতুন করে জমি অধিগ্রহনের কাজ চলছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস বলেন, ভাঙনের বিষয়টি বাঁধ নির্মানকারী প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে।

(এসএকে/এসপি/মার্চ ২৩, ২০১৯)