স্টাফ রিপোর্টার : দাফন সম্পন্ন হলো কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহর। আজ রবিবার (২৪ মার্চ) বাদ জোহর বেলা ২টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বনানীর সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে নন্দিত এই কণ্ঠশিল্পীকে।

তবে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখার সুযোগ পাননি শিল্পীর দুই সন্তান। মেয়ে নাহিদ রহমতুল্লাহ থাকেন লন্ডনে আর ছেলে সায়েফ রহমতুল্লাহ থাকেন কানাডায়। তাদের ভিসা ম্যানেজ করে আসতে সময় লেগে যাবে।

তাই ছেলেমেয়ের অপেক্ষায় না থেকে স্ত্রীকে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাহনাজ রহমতুল্লাহর স্বামী মেজর (অব.) আবুল বাশার রহমতুল্লাহ। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘ছেলেমেয়ের এসে পৌঁছাতে কত সময় লাগবে সেটা নিশ্চিত নয়। বিদেশের ব্যাপার। তাই মরদেহ নিয়ে অপেক্ষা করা হয়নি। তারা এলে মায়ের দোয়া অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। আপনার সবাই দোয়া করবেন আমার স্ত্রীর জন্য।’

এর আগে বাদ জোহর প্রয়াত শাহনাজ রহমতুল্লাহর জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বারিধারার ৯ নম্বর রোডের পার্ক মসজিদে।

১৯৫৩ সালের ২ জানুয়ারি জন্ম নেয়া এই শিল্পী অল্প বয়সেই গায়িকা হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা করেন পাকিস্তান রেডিও ও টিভিতে। তখন তিনি শাহনাজ বেগম নামে পরিচিতি পান। দেশাত্মবোধক গানের জন্য তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ; দুই দেশেই সমাদৃত।

১৯৬৩ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। সেই চলচ্চিত্রের নাম ছিলো ‘নতুন সুর’। এরপরের বছর ১৯৬৪ সালে প্রথম টেলিভিশনে গান করেন শাহনাজ। এরপর ধীরে ধীরে তিনি শ্রোতাদের কাছে পরিচিতি বাড়তে থাকে তার।

শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘আমার দেশের মাটির গন্ধে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘আমায় যদি প্রশ্ন করে’, ‘সাগরের তীর থেকে’, ‘পারি না ভুলে যেতে’, ‘ফুলের কানে ভ্রমর এসে’, ‘যে ছিলো দৃষ্টির সীমানায়’, ‘আমি তো আমার গল্প বলেছি’, ‘আরও কিছু দাও না’, ‘এই জীবনের মঞ্চে মোরা কেউবা কাঁদি কেউবা হাসি’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ ইত্যাদি।

তিনি ১৯৯২ সালে একুশে পদক পান শাহনাজ রহমতুল্লাহ। ১৯৯০ সালে ‘ছুটির ফাঁদে’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২৪, ২০১৯)