হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ পৌরবাস টার্মিনালে এক আইনজীবীর উপর পরিবহন শ্রমিকদের হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুনানী শেষে বিচারক হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দ্রুত বিচার আইনে এফআইআর করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ পৌরবাস টার্মিনালে এক আইনজীবীর উপর পরিবহন শ্রমিকদের হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুনানী শেষে বিচারক হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দ্রুত বিচার আইনে এফআইআর করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

সকালে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ শতাধিক আইনজীবীর উপস্থিতিতে বিজ্ঞ বিচারক রোকেয়া খাতুন এই নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় আইনজীবী এবং পরিবহন শ্রমিকরা রয়েছেন মুখোমুখি অবস্থানে। পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, মামলা প্রত্যাহার না করা হলে ঈদের আগে হবিগঞ্জ থেকে সকল সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে।

অভিযোগে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট মো. এনামুল হক বুধবার দুপুরে ২ বন্ধু নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশ্যে হবিগঞ্জ নতুন বাস টার্মিনালে যান। টিকেট কিনে তারা হবিগঞ্জ-সিলেট বিরতিহীন এক্সপ্রেসের ১৪৯৩নং গাড়িতে উঠে নির্দিষ্ট আসনে বসেন। গাড়িটি দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু গাড়িতে বসার পর কয়েকজন লোক বিভিন্ন যাত্রীকে টানা-হেচঁড়া করে বলপূর্বক গাড়িতে উঠানোর চেষ্টা করে।

এক পর্যায়ে তারা অতি বৃদ্ধ এক লোককে বলপূর্বক গাড়িতে তুলে অ্যাডভোকেট এনামুল হক এবং তার এক বন্ধুর উপর ফেলে দেয়। এ ঘটনায় অ্যাডভোকেট এনামুল হক প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা অশ্লীল গালিগালাজ করে তার বন্ধুসহ ৩ জনকে গাড়ি থেকে টেনে নিচে নামিয়ে দেয়। এ পর্যায়ে তাদেরকে মারধোর করা হয়। এসময় তাদের পকেট থাকা ৭৫ হাজার টাকাও নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের আক্রমণে তাদের ৩ জনেরই পরিধেয় কাপড়-চোপড় ছিড়ে যায়। ঘটনাটি জেলা আইনজীবী সমিতির কয়েকজন সদস্যকে জানানো হলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩ জনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান।

এই ঘটনায় আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনজুর উদ্দিন আহমেদ শাহীন এই ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন। তারা ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। আসামীদের পক্ষে কোন আইনজীবী যাতে কাজ না করেন সমিতির পক্ষ থেকে তার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সজিব আলী জানান, বুধবার দুপুরে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে আইনজীবীর কোন ঘটনা ঘটেনি। টার্মিনালের বাইরে যে ঘটনা ঘটেছে তা মূলত যাত্রীদের মধ্য। এই ঘটনায় যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথা। এই মামলা যদি অবিলম্বে প্রত্যাহার না করা হয় এবং পুলিশ কোন শ্রমিককে গ্রেফতারের চেষ্টা করে তাহলে সকল সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে।

হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত আদালতের কোন নির্দেশ পাইনি। আদালতের নির্দেশনা পেলে যে মোতাবেক কাজ করা হবে।

(পিডিএস/জেএ/জুলাই ২৪, ২০১৪)