ফরিদপুর প্রতিনিধি : মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে ফেরার পথে ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের মিছিলের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জেলার কয়েকজন শীর্ষনেতাসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো কয়েকজন। মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে শহরের গোয়ালচামটে ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে ও পূর্ব খাবাসপুর জোড়া ব্রিজের নিকট পৃথক পৃথক এ হামলার ঘটনা ঘটে।

বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন, বিরোধী দলকে নির্মূল করার অংশ হিসেবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদশীরা জানান, সকাল পৌনে ৮টার দিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যানারে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার পথে জামান সাহেবের পেট্রল পাম্পের সামনে এলে ৭/৮ জন যুবক প্রথমে ব্যানার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এরপর পিছন থেকে হকিষ্টিক ও লাঠিসোঠা দিয়ে এলোপাথাড়ী পেটানোর পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে।

এসময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েলের মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে। মাথার দু’টি স্থানে ২২টি সেলাই লেগেছে তার। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এছাড়া জেলা বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক দিলদার হোসেন ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি লিটন বিশ্বাসও এসময় গুরুতর জখম হন। একইসময়ে শহর বিএনপির উদ্যোগে মিছিল সহকারে স্মৃতিস্তম্ভের দিকে আসার সময় হোটেল র‌্যাফেলস ইনের অদূরে সমবেতদের উপরেও হামলা চালানো হয়। এতে জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি একে কিবরিয়া স্বপন, ছাত্রদল নেতা আল আমীন তুষার ও শ্রমিক দলের বিল্লাল তালুকদার আহত হন। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুল ইসলাম লিটন ও সহ-সভাপতি আজম খানের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির একটি মিছিল সেখানে পৌছালেও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা ফুল না দিয়েই ফিরে আসেন।

হামলার শিকার নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, জেলা ছাত্রলীগের এক নেতার নেতৃত্বে তাদের ওপর এসব হামলা চালানো হয়।

এ হামলার সময়েই জেলা যুবদলের ব্যানারে একটি মিছিল শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে আসার পথে পূর্ব খাবাসপুরে চক্ষু হাসপাতালের সামনে তাদের ওপর হামলা হয়। এসময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা, জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সেন্টু ও কোষাধ্যক্ষ ইলিয়াস হোসেন মোল্যাসহ কয়েকজন আহত হন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে এ হামলা হয় বলে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করেন।

এদিকে হামলায় আহতরা অভিযোগ করেন, রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তারা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে পুলিশ চড়াও হয়। ফলে তারা গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। অস্ত্রধারীদের হামলার পর তারা এখন নতুন মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, শ্লোগান দেয়া নিয়ে সকালে মিছিলে একটি হামলার খবর পেয়েছি। তাতে তিনজন আহত হয়েছে বলে জেনেছি। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ আমাদের নিকট কোনো অভিযোগ করতে আসেনি।

(পি/এসপি/মার্চ ২৬, ২০১৯)