স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা মামলায় শাহআলী থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন মিয়ার সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারক মো. মজিবুর রহমান তার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আর্টিজানে হামলার সময় পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. সালাউদ্দিন মিয়া গুলশান থানার ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ নিয়ে মামলাটিতে এখন পর্যন্ত ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।

জবানবন্দিতে সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ঘটনার দিন গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে গোলাগুলির সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান তিনি। সেখানে গিয়ে এসআই ফারুকসহ অনেককে দেখতে পান। রেস্তোরাঁর ভেতরে সন্ত্রাসীদের আল্লাহু আকবার ধ্বনি দেওয়া, গুলি করা ও বোমা নিক্ষেপ করার শব্দ শুনতে পান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৭৯/২০ নম্বর বাড়ির পাশে সন্ত্রাসীরা গ্রেনেড ও গুলিবর্ষণ করতে করে। ওই সময় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিনসহ ৩০/৩৫ জন গুরুতর আহত হয়। কিছু সময় পর সালাউদ্দিনের মৃত্যুর খবর শুনতে পান তিনি। পরদিন যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

সালাউদ্দিন মিয়া আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা দেশ-বিদেশি নাগরিক হত্যা করে। লাশগুলি উদ্ধারের পর সুরতহালের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ওই ঘটনায় ওই বছর ৪ জুলাই গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। তিনি ওই মামলার রেকর্ডিং অফিসার ছিলেন।

জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ এ সাক্ষীকে জেরা করেন। জেরা শেষে ৪ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করা হয়।

সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আসামি মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন, শফিকুল ইসলাম ওরফে খালেদ, হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী ও হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এর আগে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন।

ওই ঘটনায় করা মামলায় ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করার পর গত ৪ ডিসেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।


(ওএস/অ/মার্চ ২৭, ২০১৯)