রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ


 

আমাদের জীবনটা খুব ছোট। মহাকালের কাছে তা নিতান্তই তুচ্ছ। অথচ এই এক জীবনেই আছে রাশি রাশি কর্তব্য। যারা সময়ের এই আপেক্ষিকতাকে ধারণ করে জীবনকে সময়ের মূল্যমানে অর্থবহ করে তুলতে চায়- তারাই কালের পৃষ্ঠায় জেগে থাকে বেঁচে থাকেন মানুষের মণি কোঠায়।

আজ তেমনি একজন মানুষের কথাই বলছি। এক জীবনে করেছেন অনেক কিছুই অথচ নিভৃতচারি, প্রচার বিমুখ। হ্যা পাঠক! আমি সেই মানুষ মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ এর কথাই বলছি।

একদা মফস্বল এর এক দুরন্ত বালক সর্বত্রই যার বিচরণ ছিল অবাধ আর দুর্দমনীয়। কোথায় নেই তিনি? নাটক পাড়ায়, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে, মুখর কবিতার আড্ডায়, গানের
আসরে, বিতর্কে, ছাত্র রাজনীতি আর কোথায়?

ছাত্রজীবনেই দুরন্ত সাহসিকতার সাথে মফস্বল শহরে বসে বানালেন আর্টফিলম। বেশ হইচই পড়ে গেল আমাদের ছোট শহর ফরিদপুর এ।

খুব ভালো রেজাল্ট করে রাতারাতি বিসিএস করে সম্মোহন জাগানিয়া শ্রেণী শিক্ষক ছিলেন কিছুকাল। প্রচন্ড জনপ্রিয় শিক্ষক আবার সহসা মুখ ফেরালেন। ভীরে গেলেন প্রশাসনে। এখনো টিকে আছেন পুরনো নেশা লেখালেখি, আবৃত্তি, গান, পড়াশোনা নিয়ে। একাধারে কবি,আবৃতি বা বাচিক শিল্পী, নাট্যকার, নাট্যনির্মাতা, উপস্থাপক,গবেষক মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ এর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের অধিক। বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতির এবং ইতিহাস ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক গবেষণা আছে তার। সম্প্রতি লিখছেন গান এবং আত্মপ্রকাশ করেছেন কণ্ঠশিল্পী হিসেবেও। তাঁর লেখা গান করেছেন এপার বাংলা ওপার বাংলার প্রথিতযশা শিল্পীরা। এর মধ্যে অন্যতম সুবীর নন্দী, হৈমন্তী শুক্লা,এই প্রজন্মের লোকশিল্পী রিংকু, গোলাম সারোয়ার, আফিয়া জাহান, জিন্নাহ খান, চন্দন কুমার টিকাদারসহ আরো অনেকে।

কিছু দিন আগে সিডি চয়েজ থেকে রিলিজ হয়েছে তার "সুরঞ্জনা", "তুমি আমি দুজনে", "আমার বুকের মাঝে", "যদি মন চায়" প্রভৃতি এলবাম। আমরা প্রত্যাশা করি এই বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী সব্যসাচী মানুষটি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুন তার সৃজনশীলতার মাঝে। মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ বর্তমানে সরকারের একটি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছেন।