স্টাফ রিপোর্টার : যেখানে-সেখানে শিল্প কারখানা স্থাপন করে কৃষি জমি নষ্ট না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, শিল্পায়নের পাশাপাশি খাদ্যপণ্য উৎপাদন করতে হবে। এজন্য পরিকল্পিতভাবে কারখানা গড়ে তুলতে শিল্প উদ্যোক্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

রবিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শিল্প মেলার উদ্বোধন করার সময় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের কুটির শিল্প, মাঝারি শিল্প গড়লেও বৃহৎ শিল্প সেরকম গড়ে ওঠেনি। তার জন্য বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে দেয়া দরকার এবং জায়গায় তৈরি করা দরকার। আমরা চাই না, যেখানে সেখানে শিল্প কারখানা গড়ে উঠে কৃষি জমি নষ্ট হোক।’

অনুষ্ঠানে পরিকল্পিতভাবে সম্পদ ব্যবহারের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করে সরকারপ্রধান। বলেন, বাংলাদেশের মাটি, পানি সবকিছুই ব্যবহার করা যায়। এটা আমাদের বিরাট সম্পদ। সেই সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পনামাফিক সামনে এগোতে হবে।

‘আমাদের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যচাহিদা পূরণ করতে হবে। আবার কৃষিপণ্য উৎপাদন করে সেগুলো প্রচুর পরিমাণে বিদেশে রপ্তানি করতে আবার দেশের ভেতর বাজারও সৃষ্টি করতে পারি।’

দেশের আর্থসামজিক উন্নয়ন ও নতুন উদ্যোক্ত সৃষ্টিতে শিল্পমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া দেশের অগ্রযাত্রা যেন ব্যাহত না না সেদিকে লক্ষ্য রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।

ব্যাংক ঋণে সুদ কমাতে পদক্ষেপ নেবে সরকার

দেশের শিল্পায়নের বিকাশে ব্যাংক ঋণে সুদ কমাতে ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করবেন বলেন জানান। বলেন, এ বিষয়ে আমরা আবার বসবো। কীভাবে ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানো যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি, আমি আবার উদ্যোগ নিলাম, সবার সঙ্গে কথাও বললাম। বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধাও করে দিলাম। যেমন আমাদের সরকারি ব্যাংকের অর্থ আগে ৭০ শতাংশ সরকারি ব্যাংকে রাখা হতো, বাকি রাখা হতো বেসরকারি ব্যাংকে। ব্যাংকের মালিকরা বললো এটা যদি ৫০-৫০ করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনবো। আমরা সেটা করে দিলাম।’

‘কিছু ব্যাংক ঠিকই সুদের হার ৯ শতাংশে নামালো কিন্তু সবাই তা করলো না। না করে বাড়তে বাড়তে প্রায় ১৪, ১৫, ১৬ তে নিয়ে গেলো। কেন করলো না তাদের এই সুযোগটা দেওয়া সত্ত্বেও।’

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, ব্যাংকের মালিক যারা, তাদেরও তো শিল্প কলকারখানা আছে, তারাও তো ব্যবসা বাণিজ্য করেন। তাহলে আমার তো সেই জায়গাটাতে হাত দিতেই হবে। তারা ব্যাংকও চালাচ্ছে, শিল্পও চালাচ্ছে। আবার তারা সুদের হার কমাবে না। তাহলে তাদের ব্যবসা কি কি আছে, না আছে, ট্যাক্সটা ঠিকমতো দিচ্ছে কিনা, ভ্যাটটা দিচ্ছে কিনা, কাঁচামাল ঠিকমতো আছে কিনা, শুধু সরকার সব করে দেবে তা তো না।

ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা শোধ না করার প্রবণতা দূর করার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঋণ শোধ না করার প্রবণতা অনেকের মধ্যে রয়েছে। এই প্রবণতা আমাদের দূর করতে হবে। ঋণ ফেরত দিলেই ব্যাংকগুলো সহজেই সুদের হার কমাতে পারবে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা সবচেয়ে বেশি ব্যাংক-বীমা করেছি। তাদের সুযোগ-সুবিধাও দিয়েছে। কৃষকরা এখন ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন না। শিক্ষকরা ব্যাংক থেকে বেতন নিচ্ছেন।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ০১, ২০১৯)