উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : নয়াদিল্লীস্থ পাকিস্তান দূতাবাসের দুজন কর্মকর্তা শাহাবউদ্দিন আহমদ ও আমজাদুল হক পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন। তাঁরাই বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণাকারী প্রথম কূটনৈতিক।

মুসলিম লীগ নেতা এ. সবুর খান ঢাকায় সামরিক আইন প্রশাসক লে. জেনারেল টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

জামায়েত ইসলামীর প্রাদেশিক আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম, অধ্যাপক গোলাম সারোয়ার ও মওলানা নূরুজ্জামান ঢাকায় এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি পূর্ব পাকিস্তানের দেশ প্রেমিক জনসাধারণ ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) যেখানেই দেখবে সেখানেই তাদের ধ্বংস সাধন করবে। দুষ্কৃতকারীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) দমনে নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীকে এ ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য আমরা সবার প্রতি অনুরোধ জানাই।’

ইসলামিক রিপাবলিক পার্টির সভাপতি মওলানা নূরুজ্জামান খান ঢাকায় এক ববিৃতিতে বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী দুষ্কৃতকারীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) দমনে নিয়োজিত। দেশপ্রেমিক নাগরিকরা দেশরক্ষায় তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা করুন।’
সমস্ত সিলেট জেলা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। পাকসেনারা সিলেট বিমান বন্দর ও লাক্কাতুরা চা বাগানের আশেপাশে একত্র হয়।

বিকালে পাকসেনারা নড়াইল-যশোর রোড দাইতলা নামক স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ব্যুহতে আক্রমণ চালায়। মুক্তিবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে পাকসেনারা টিকে থাকতে না পেরে পিছনে ফিরে চলে যায়। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর আনুমানিক ৩০ জন নিহত হয়। অপরপক্ষে, মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ হতাহত হয়নি।

পার্বতীপুরের বিহারীরা নিকটবর্তী গ্রামগুলিতে ব্যাপকহারে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে এবং নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

নীলফামারী পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা খানসামাতে ডিফেন্স নেয়।
মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনার দখলকৃত খুলনা রেডিও স্টেশনের উপর আক্রমণ চালায়। একরাতব্যাপী এ যুদ্ধে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন।

পাকসেনারা খুলনার দৌলতপুরের রঘুনাথপুর গ্রামে হামলা চালায় এবং সেখানে বহুলোককে হত্যা করে।

ঢাকায় সামরিক আইন প্রশাসক টিক্কা খান অফিসার ও প্রশাসক নিয়োগ সম্পর্কিত ‘সামরিক আইন বিধি ১৩৭’ জারি করে।

‘গুরুত্বপূর্ণ রেল শহর পার্বতীপুর মুক্ত’ এ শিরোনামে সুখরঞ্জন দাশগুপ্তের লেখা সংবাদ আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

যশোর সদরের ৮ মাইল পূর্ব-উত্তর কোণে লেবুতলা নামক গ্র্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল গুলি বিনিময় হয়। কয়েক ঘন্টার এ সংঘর্ষে পাকবাহিনরি ৫০ জন সৈন্যের মৃত্যু ও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে যশোর সেনানিবাসে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
১৭নং বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল মেঘ সিং, বিএসএফ-এর অফিসারসহ দুটি কোম্পানি পূর্ণ সামরিক সম্ভার নিয়ে ঝিকরগাছা লাওজান গেটের নিকট প্রতিরক্ষা ব্যুহ গড়ে তোলে।

নীলফামারীতে পাকসেনারা পূর্ণ সামরিক সম্ভারসহ সুবেদার মজিদের বাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। এ সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ৮ জন নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষতি স্বীকার করলেও অটুট মনোবল নিয়ে দেবীগঞ্জে এসে ডিফেন্স নেয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্লাটুন কালুর ঘাট থেকে লালমনিরহাট পর্যন্ত এলাকায় পাকবাহিনীর সহযোগী সশস্ত্র অবাঙালিদের উপর আক্রমণ চালিয়ে ২১ জনকে হত্যা করে।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

(ওএস/এএস/এপ্রিল ০৭, ২০১৯)