স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীতে পরিবহন শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। চলছে ডিএমপির স্পেশাল টাস্কফোর্সের অভিযানও। এরই মধ্যে আজ (মঙ্গলবার) থেকে সারাদেশে ‘ট্রাফিক পক্ষ’ পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে। তবে সড়কের যানবাহন চলাচলে অব্যবস্থাপনায় অনেকটাই নীরব ছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এবার তারাও এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেছে।

নীরবতা ভেঙে সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা আনয়নে এবং লক্কর-ঝক্কর বাসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে বিআরটিএ তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, ‘রাস্তায় কোনো রঙচটা, জরাজীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান দেখা গেলে বা রাস্তায় কোনো ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন হতে দেখলে উক্ত অবস্থার ছবি, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, স্থান, তারিখ ও সময় উল্লেখ করে বিআরটিএ’র ফেসবুক পেজে www.facebook.com/brta.gov.bd পোস্ট বা [email protected] ঠিকানায় ই-মেইল পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট গাড়ির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ওই পোস্টের বিপরীতে তারিকুল নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, ‘ছবি দেয়ার পরে ব্যবস্থা নিয়েছেন এমন কিছু প্রমাণ দিন। মিরপুর বিআরটিএ’র অফিসের সামনে দিয়ে মিরপুর-১০ টু মিরপুর-১৪ নম্বর রুটে মুড়ির টিন লেগুনা যাদের ফিটনেসের কোনো বালাই নেই চলাচল করে। এটা দেখার জন্য ছবি তুলে পোস্ট দেয়ার প্রয়োজন নেই, বিআরটিএ’র অফিসের সামনে দাঁড়ালেই খালি চোখে এসব দেখা যায়।’

মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিআরটিএ জবাবও দিয়েছে। জানিয়েছে, ‘ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, রুটপারমিট, ইন্স্যুরেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ মোটরযান রাস্তায় চলাচল করা সম্পূর্ণ বেআইনি। রাস্তায় মোটরযান চলাচল ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃপক্ষের ওপর এ বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেয়া আছে। তারপরও এ পোস্টের উল্লিখিত তথ্যসহ ছবি পাঠালে এবং তা প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ প্রয়োজনে বিআরটিএ’র পরিচালকের (এনফোর্সমেন্ট) সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধও জানানো হয়।

এ বিষয়ে বিআরটিএ’র পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয় বিআরটিএ। আবার এটি পরীক্ষাও করে বিআরটিএ। অনেক মোটরযান ফিটনেস ছাড়াই সড়কে চলাচল করছে। আবার অনেকে মোটরযানের ফিটনেস মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও মালিকপক্ষ ফিটনেস পরীক্ষা করে না। সড়কে পরিবহন শৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের মোবাইল কোর্ট কাজ করছে। এরপরও সড়কে লক্কর-ঝক্কর বাস, রঙচটা, জরাজীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচলের অভিযোগও মিলছে। আমাদের যেহেতু মাঠ পর্যায়ে লোকবল কম তাই নজরদারিও সার্বক্ষণিক নেয়া সম্ভব হয় না। তাই সচেতন নগরবাসীর সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, নগরবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, লক্কর-ঝক্কর বাস, রঙচটা, জরাজীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচল করতে দেখলে বা রাস্তায় কোনো ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন হতে দেখলে ছবি, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, স্থান, তারিখ ও সময় উল্লেখ করে বিআরটিএ’র ফেসবুক পেজ বা ই-মেইলে প্রেরণ করুন। আমরা প্রমাণসাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট মোটরযানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১৬, ২০১৯)