মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নিজের ইচ্ছে শক্তি ও মা -বাবার অনুপ্রেরণায় মিনি কম্পিউটার তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করল নেত্রকোনার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী ক্ষুদে কম্পিউটার বিজ্ঞানী কামরুজ্জামান আল হাদি। হাদির গবেষণার ফসল এ কম্পিউটার দেখতে প্রতিদিন তার বাসায় গণমাধ্যম কর্মীগণসহ উৎসুখ জনতা ভীড় জমাচ্ছে।

বাসার কম্পিউটারে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে সে নিজেই তা মেরামত করার কাজ করত। এ থেকেই তার মাথায় আসে কম্পিউটার তৈরির ভাবনা ।

প্রাথমিকভাবে মোবাইলের মনিটর ব্যবহার করে, প্লাস্টিক দিয়ে সিপিইউর বক্স তৈরি করে ও তাতে মোবাইলের মাদারবোর্ড ব্যবহার করে সিপিইউর পূর্ণাঙ্গ সেটাপ সম্পন্ন করে। আর হাতে লিখা অক্ষর প্রতিস্থাপন করে তৈরি করে কী-বোর্ড। সিডির চাকা ও টিনের আবরণের মধ্যে তার সংযুক্ত করে মাউস তৈরি করে।

সিপিইউ থেকে একটি সাউন্ডবক্সের সংযোগ দেয়া হয়। মোবাইলের বেটারির মাধ্যমেই চলে তার এ মিনি কম্পিউটারের অডিও, ভিডিও,এমএস ওয়ার্ড ও ইন্টারনেট প্রোগ্রাম।

ছোট আকারের এ কম্পিউটার তৈরিতে তার খরচ হয়েছে ২০০০ টাকা। গত ৬ মাস ধরে চিন্তার ফসল হলো তার এ কম্পিউটার।

কামরুজ্জামান আল হাদি জানায়, আমার ইচ্ছে হলো বতর্মান সরকারের ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা কম খরচে সবার ঘরে পৌঁছে দেয়া। যাতে সব শিক্ষার্থী সহজেই কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। অর্থের অভাবে যন্ত্রপাতি ক্রয় করা আমার পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমার ইচ্ছে শক্তি কাজে লাগিয়ে দেশের কোন উপকার করতে পারছি না। প্রধান মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দেশের ধনাঢ্য ব্যাক্তিরা আমাকে সহযোগিতা করলে আমি সহজেই কম খরচে কম্পিউটার তৈরি করে বাজারজাত করতে পারব।

বাবা পেশায় শিক্ষক ও মা গৃহিণী। ৪ ভাই ৫ বোনের মধ্যে হাদি চতুর্থ। হাদির বাবা মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা সাইদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমার টানাপোরণ সংসারে প্রথমে বিরক্ত হলেও পরে ছেলের অদম্য ইচ্ছার প্রতি সমর্থন করে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য তাকে কিছু টাকা দেই। এতে সে একটি মিনি কম্পিউটার তৈরি করেছে যার মাধ্যমে সকল কাজ করা সম্ভব। আমার ছেলেকে সরকার বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কোন সহযোগিতা করলে সে অনেক দূর এগিয়ে যেত।

এ ব্যাপারে হাদির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাহাঙ্গীরপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মন্জরুল হক খান বলেন, উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করে হাদি আমাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম কুড়িয়ে এনেছে।

এ বিষয়ে মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়ালিউল হাসান তার মিনি কম্পিউটার তৈরির বিষয়ে অবগত আছেন জানিয়ে বলেন, আমরাই তাকে উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। তার পৃষ্ঠপোষকতা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

(এমএমএ/এসপি/এপ্রিল ২০, ২০১৯)