স্টাফ রিপোর্টার : ছোট্ট শিশু জায়ান। বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখতে গিয়েছিল দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম হলেও রাজনীতির আগুনের আঁচ তার দেখা ছিল না। বৈশ্বিক রাজনীতির প্যাঁচের সাথে ন্যূনতম সম্পর্কও তার হয়নি। ধর্ম বর্ণ রাষ্ট্র নিয়ে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ কিভাবে হয় তাও তার জানা হয়নি। সেই ভেদাভেদের আগুনে পুড়েই শেষ হয়ে যেতে হলে নিষ্পাপ শিশু জায়ানকে। হাসপাতালে এখনও ভর্তি তারা বাবা মশিউল হক চৌধুরী।

শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ানের মরদেহ আজ দুপুরে ঢাকায় পৌঁছেছে। বুধবার দুপুর পৌনে ১টায় শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে জায়ানের মরদেহ হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমান বাংলাদেশ এযালাইন্সের কার্গো শাখার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক আরিফ উল্লাহ।

আদরের নাতির লাশ আনতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন নানা শেখ ফজলুল করিম সেলিম। দুপুর দেড়টার দিকে আট বছরের নাতির নিথর দেহ নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। সেই বাড়িতে চলছে শোকের মাতোম। জায়ানের আত্মার শান্তি কামনায় সকাল থেকে করা হচ্ছে কোরআন তেলাওয়াত।

বাসার কাছেই, যে মাঠে কাটছিল জায়ানের শৈশব সেখানেই তার জানাজার আয়োজন শেষ হয়েছে। মাঠের গেটের পাশের গাছটায় ফুটেছে রাঙা কৃষ্ণচূড়া। যে রাঙা ফুলের সৌন্দর্যে এতদিন জায়ান বিহব্বল হতো, আজ সেই ফুলও তাকে জানাবে শেষ বিদায়। বনানী কবরস্থানে দাফনের আয়োজনও শেষ হয়েছে।

জায়ানকে শেষবারের মতো দেখতে আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসবেন সরকারের মন্ত্রী-এমপি, আসবেন সাধারণ মানুষও। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়িটি ঘিরে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাদ আসর এখানেই হবে তার নামাজে জানাজা। পরে দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে।

গেল রবিবার শ্রীলঙ্কায় চালানো সিরিজ বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫৯ জন নিহত হয়েছেন। এর দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ওই হামলায় আহত হন অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষ। সেদিনের সকালে শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা, তিনটি বিলাসবহুল হোটেল ও দুটি স্থাপনায় সংঘবদ্ধ বোমা হামলা চালানো হয়। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৮ জন বিদেশি নাগরিক।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০১৯)