সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : বোরো ধান কেটে কৃষকের গোলায় তোলার জন্য দেখা দিয়েছে কৃষি শ্রমিকের সংকট। শ্রমিক সংকটের ফলে কৃষকরা পরেছেন বেকায়দায়। এক মন ধানের দামেও মিলছেনা একজন কৃষি শ্রমিক। ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে নানামুখি সমস্যায় ভুগছেন।

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় বোরো মৌসুমে ২০ হাজার ২শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চন্দন কুমার মহাপাত্র জানান, বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। কৃষি শ্রমিকের সংকট ও ধানের দাম কম থাকলেও কেন্দুয়া এলাকায় ২৮ ধানের তেমন কোন ছিটা হয়নি। ফলনও ভাল হয়েছে।

মামুদপুর গ্রামের কৃষক দিদারুল ইসলাম জানান, একজন কৃষি শ্রমিকের একদিনের মজুরী ৭ থেকে ৮শ টাকা। অথচ একমন ধানের মূল্য ৫শ থেকে সাড়ে ৫শ টাকা। অর্থাৎ এক মন ধানের মূল্য দিয়েও একজন কৃষি শ্রমিকের মজুরী হয়না। তাছাড়া বাজারে ধানের দাম কম থাকলেও চালের দাম অনেক বেশি। এক কেজি ২৮ থেকে ৩০, ৩২ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আবার বিক্রি করতে গেলে ওই দামে কৃষকরা বিক্রি করতে পারেন না। অনেক কৃষকরা তাদের পাঁকা জমি কৃষি শ্রমিকদেরকেই অর্ধেক অর্ধেক ভাগে কেটে নেয়ার জন্য দিয়ে দিচ্ছেন।

নওপাড়া দনাচাপুর গ্রামের কৃষক কার্তিক দত্ত জানান, ধানে ছিটা হয়েছে। এর পরও ধান কাটতে গেলে কৃষি শ্রমিক মিলছেনা। যে কারণে কৃষি শ্রমিককে জমিতে ধান কেটে নেয়ার জন্য অর্ধেক দিয়ে দেয়া হচ্ছে। ধানের দাম কম থাকাতেই কৃষকরা খুব অসুবিধায় পড়েছি। ধানের ন্যায্য মূল্য ও চালের অতিরিক্ত মূল্য, শ্রমিক সংকট ও শ্রমিকের অতিরিক্ত মজুরী নিয়ে কৃষকরা চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়েছেন।

সাজিউড়া গ্রামের কৃষক সিদ্দিকুর রহমান জানান, এরকম অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের কৃষি কাজ করে পোষাবেনা, ছেড়ে দিতে হবে জমির আবাদ। বাট্টা গ্রামের কৃষক মুখসুমুল হাকিম মনু বলেন, সরকার ধানের ন্যায্য মূল্য না দিলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়বে। ফলে এক সময় তাদের কৃষি কাজ বাদ দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

(এসবি/এসপি/এপ্রিল ২৫, ২০১৯)