চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গায় নিজের ব্যাক্তিগত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে রাজিব আহম্মেদ (১৭) নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধায় নিজ বাড়িতে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজীবের মৃত্যু হয়। 

রাজিব আহম্মেদ দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের ইব্রাহীমপুর গ্রামের মনির উদ্দীনের ছেলে।

নিহত রাজীবের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিজের ফেইসবুকে পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন, ভাই-ভাবী সহ সকলের কাছে বিদায় জানিয়ে একটি পোস্ট করে রাজিব। রাজীবের সেই পোস্টটি তার বড় ভাই দেখা মাত্র বাড়িতে ফোন করে। কিন্তু তার আগেই বিষ পান করে রাজীব। রাতেই রাজীবের মরদেহ বাড়িতে নেয়া হয়।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সুকুমার বিশ্বাস জানান, যুবকের আত্মহত্যার বিষয়টি শুনছি। বিস্তারিত শুনে সাংবাদিকদের অভিহিত করবো।

নিহত রাজীর মৃত্যুর আগে তার ভাষায় ফেসবুকে সেই পোস্টটি তুলে ধরা হলো........

(এটা আমার লাইফের শেষ স্ট্যাটাস। এটা জানি কথা গুলো শোনার পর অনেকে মানতে পারবে না, আবার অনেকের কাছে ভালো লাগবে শুনে। কিন্তু এটাই হয়ে গেছে সময়ের কাছে বাস্তবতার কাছে। আমি হেরে গেলাম খুব ইচ্ছে ছিলো আর দশ জনের মতো স্বাভাবিক ভাবে জীবন চলানোর কিন্তু পারলাম না, ডিশিসন টা আমি খুব সহজ ভাবে নেই নাই। আমাকে বাধ্য হয়ে নিতে হইছে। ডিপ্রেশন আমাকে শেষ করে দিছে। মেন্টালি ফিজিক্যালি কোন ভাবেই আমি ভালো নেই।

স্বপ্ন ছিলো অনেক কিন্তু সেটা পূরন করতে পারলাম না, তার আগেই চলে যেতে হলো আমাকে মাফ করে দিবেন সবাই, বড় ভাই-ভাবি, মেজো ভাই, ফ্রেন্ডস কারো সাথে যদি কখনো অন্যায় করে থাকি তাহলে ক্ষমা করে দিয়েন সবাই, আর ফ্যামিলির কথা কি বলবো যদিও সবাই ভুলে যাবে কিন্তু ফ্যামেলি কখনো ভুলবে না। বাবা-মা, ভাই সবাই আমাকে মাফ করে দিয়ো ভালো থেকো তোমরা সব সময়।

দোস্ত তুরাই আমার লাইফে একটা বেষ্ট পার্সোন ছিলি। সবসময় আমাকে সাপোর্ট করতি ভালো উপদেশ দিতি কিন্তু আমি শুনি নাই আজকে যদি তোর কথা গুলো শুনতাম তাহলে আর এই দিন দেখতে হতো না আমার ভালো থাকিস সবসময় নিজের খেয়াল রাখিস আর আমাকে মাফ করে দিস দোস্ত।

ভালো থেকো প্রিয় মা-বাবা। ভালো থেকো প্রিয় মানুষ। ক্ষমা করে দিও আমায়...!!

সব শেষ একটা কথা বলে যাই আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, ভালো থাকবেন সবাই আল্লাহ হাফেজ।

(টিটি/এসপি/এপ্রিল ২৬, ২০১৯)