মংলা প্রতিনিধি : রক্ষকরাই ভক্ষকে পরিণত হওয়ায় কার্যত অরক্ষিত হয়ে পড়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। ঈদ মৌসুমকে সামনে রেখে চোরাকারবারীদের সাথে পাল্লা দিয়ে বন রক্ষাকারী বনবিভাগ ও কোস্টগার্ড এখন যোগসাযশে সুন্দরবন ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে। শাহিন আলম নামের এক কোস্টগার্ড সদস্য প্রায় ৫০০ ঘনফুট সুন্দরী কাঠ বন সংলগ্ন শরণখোল উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের রাজৈর এলাকার একটি করাত কলে (স’মিল) গোপনে ফাড়াই করতে নিয়ে আসেন।

এ সময় স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শরণখোলা থানা পুলিশ শুক্রবার দুপুরে লামিম এন্টারপ্রাইজ নামে কাঠ বহনকারী একটি ট্রলারসহ ট্রলারে থাকা কাঠ জব্দ করে। সুপতি ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা কাঠগুলো আনার অনুমতি দিয়েছেন বলে কোস্টগার্ডের ওই সদস্য দাবি করেন। শাহিন আলম পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি কোস্টগার্ড স্টেশনের একজন সদস্য। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কোস্ট গার্ডের ওই সদস্য ও তার সাথে থাকা সুন্দরবনের চিহ্নিত কাঠ চোরাকারবারী উপজেলার বাংলাবাজার এলাকার মৃত আমজেদ বয়াতীর ছেলে ফারুক বয়াতী (৪৫) পালিয়ে যায়। এ সময় কোস্টগার্ডের সদস্য ও কাঠ চোরাকারবারী দুজনেই কোস্টগাডের্র কমলা রঙের জ্যাকেট পরিহিত ছিলেন।

সুপতি ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা (এসও) মো. মনিরুজ্জামান জানান, সুন্দরী কাঠগুলো তারা বন থেকে চুরি করে নিয়েছে। কাঠ নেয়ার জন্য তাদেরকে কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি। এর আগেও কোস্টগার্ড প্রায় ৬০০ ঘনফুট রেইনট্রি গাছ বিক্রি করেছে বলে তিনি জানান।

শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে তারা রাজৈর এলাকার একটি স’মিল থেকে প্রায় ৫০০ ঘনফুট সুন্দরী গাছ ও ফাড়াই করা কাঠ জব্দ করা হয়। তবে, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কোস্টগার্ড সদস্য ও জড়িত অন্যরা পািলয়ে যায়। জব্দকৃত কাঠ ও ট্রলার বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জব্দকৃত কাঠ ও ট্রলারের মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা বলে জানা গেছে। সুপতি কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. বাদল মুঠোফোনে জানান, তাদের সদস্য শাহিনকে কোনো সুন্দরী কাঠ ফাড়াই করতে পাঠানো হয়নি। কিন্তু ৫০০ ঘনফুট কাঠের ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই।

শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. কামাল আহমেদ জানান, সুন্দরী কাঠগুলো কোস্টগার্ড কিভাবে পেল তা তাদের জানা নেই। পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকার্তা (বাগেরহাট) আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, এতে বনবিভাগের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, সে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এএইচ/জেএ/জুলাই ২৫, ২০১৪)