দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর লোহালিয়া নদীতে ঢাকা-পটুয়াখালী রুটের সুন্দরবন-৮ দোতলা লঞ্চের ধাক্কায় মহিষ বোঝাই ট্রলার দুর্ঘটনায় নিখোঁজ নুরুল আলম (৬০), মনির হোসেন (৪০) নামের দু’গরু ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। আহত আবদুল খালেক (৪৫) কে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১২টায় দুমকি উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের সন্তোষদি চর এলাকায় নদীতে ভাসতে দেখে স্থানীয়দের খবরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ দু’টি উদ্ধার করে। দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মনিরুজ্জামান বলেন, লোহালিয়া নদীর পশ্চিম তীরে সন্তোষদি চরাঞ্চলের নদীতে ভাসমান লাশ দেখে স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ দু’টি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

দুর্ঘটনায় পতিত ট্রলারের ব্যবসায়ী মো: ইলিয়াস হোসেন অভিযোগ জানান, গলাচিপার নলুয়াবাগী হাট থেকে অর্ধশতাধিক মহিষ ক্রয় করে ট্রলার ভর্তি করে তারা নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ঝিলনা এলাকায় লোহালিয়া নদীর বাক ঘোরার সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সুন্দরবন-৮ দোতলা লঞ্চের সাথে ধাক্কা লেগে ট্রলারটির অনেকাংশ দুমড়ে মুচরে ডুবু ডুবু অবস্থায় তীরে ঠেকে রক্ষা পায়।

দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল খালেক (৪৫) গুরুতর আহত হয়। ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ী নুরুল আলম (৬০), মনির হোসেন (৪০) ছিটকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়। দুর্ঘটনার পর দোতলা লঞ্চটি আরও গতি বাড়িয়ে দ্রুত চরগরবদি হয়ে পটুয়াখালীর দিকে চলে যায়। আহত খালেককে গতকাল শনিবার সকালে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মুরাদিয়া ইউপি চোয়ারম্যান মো: জাফর উল্লাহ স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে জানান, শুক্রবার ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সুন্দরবন-৮ দোতলা লঞ্চটি ঝিলনা নদীতে বাক নেয়ার সময় মহিশ বোঝাই ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে ট্রলারের ছাদে ঘুমন্ত ও দু’ব্যক্তি ছিটকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়। বহু খোঁজাখুজি করেও লাশের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। দুর্ঘটনায় ডুবু ডুবু ট্রলারটি অনেকাংশ দুমড়ে মুচরে গেছে। তিনি আরও জানান, দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন হাট বাজার থেকে ওই ব্যবসায়ীরা গরু-মহিষ কিনে ট্রলার ভর্তি করে ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে ঝিলনা অতিক্রমকালে দুর্ঘটনায় পতিত হয়।

তবে সুন্দরবন-৮ লঞ্চের সুকানী মো: কবির হোসেন দুর্ঘটনার সত্যতা পুরোপুরি অস্বীকার করে জানান, ঝিলনাতে কোন ট্রলারের সাথে তাদের ধাক্কা লাগেনি।

পোর্ট অফিসার, খাজা সাদিকুর রহমান বলেন, ঢাকা-পটুয়াখালী ও গলাচিপা রুটে ৫টি দোতলা লঞ্চ এসেছে। রাতের অন্ধকারে দুর্ঘটনাটি ঘটায় কোন লঞ্চ কর্তৃপক্ষই দায় স্বীকার করছে না। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এস/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০১৯)