মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে মৌলভীবাজারের শেরপুরে বাস চাপায় হত্যার ঘটনায় উদার পরিবহণের বাস চালক ও হেলপারের বিরুদ্ধে দায়ের কৃত মামলা প্রত্যাহারের অযৌক্তিক দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা সকাল সন্ধ্যা সর্বাত্মক ধর্মঘটের কারনে মৌলভীবাজারের সাধারণ যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।

ধর্মঘটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী,পরীক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও কর্মজীবীসহ বিভিন্ন পেশার সাধারণ মানুষ। জেলা শহর ছাড়াও আশপাশের গ্রামাঞ্চল থেকেও মানুষ আসতে পাড়ছেনা শহরে। এতে সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোগান্তিতে পড়া সাধারণ মানুষ।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) ধর্মঘট চলাকালে শহর ও আশপাশের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায় সবগুলো সড়কই যানবাহন শুন্য, দুরপাল্লার সবগুলো বাসও রয়েছে বন্ধ।

গত ২৩ মার্চ বিকেলের দিকে ঢাকা-সিলেট সড়কের মৌলভীবাজারের শেরপুর এলাকায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ ওয়াসিম আব্বাসকে উদার পরিবহনের একটি বাসে ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বাসের সহকারী ধাক্কা দিয়ে চলন্ত বাস থেকে তাকে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থলেই বাসের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে ওয়াসিমের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে ঐদিন মধ্যরাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চালক জুয়েল ও হেলপার মাসুককে আটক করে। আর সেই শিক্ষার্থী ‘হত্যাকারী চালক ও সহকারীর পক্ষে ধর্মঘটে নেমেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

শ্রমিকরা চালক ও সহকারীকে হত্যার মামলা থেকে অব্যাহতি ৩০২ ধারা বাতিল,সড়ক পরিবহনের আইনের কয়েকটি ধারার সংশোধন, এক জেলার গাড়ি অন্য জেলায় রিকুজিশন না করা এবং রিকুজিশন কালীন সময়ে শ্রমিকদের খুরাকি ও ফুয়েল প্রদান করা,সড়ক চেকিংয়ের নামে যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে পুলিশি হয়রানী বন্ধকরা, রাত্রি বেলায় ট্রাক চেকিং বন্ধ করা, একাধিক স্থানে গাড়ি চেকিং না করে জেলার নির্দিষ্ট কোন স্থানে গাড়ি চেকিং করা, রেজিষ্ট্রেশন বিহীন সিএনজি চালিত অটোরিকশা বন্ধ করা, রেকারিং এর নামে পুলিশ চাঁদাবাজি বন্ধ করা, সড়ক ও মহা সড়কে বিভিন্ন সেতুতে টোল আদায় বন্ধ করাসহ ৭ দফা দাবিতে মৌলভীবাজারসহ সিলেট বিভাগের চার জেলায় আজ সকাল-সন্ধ্যা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়।

ধর্মঘটে মৌলভীবাজার জেলার সাথে সবকটি উপজেলার যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। শহরের চাঁদনীঘাট, কুসুমবাগ, শমসেরনগর সড়ক ও ঢাকা-সিলেট বাসস্ট্যান্ডে সিএনজি, ট্রাক ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে এপর্যন্ত জেলার কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা জানান শিক্ষার্থী ওয়াসীম হত্যা মামলার এজাহারে ৩০২ ধারা যুক্ত করা নিয়ে তাদের আপত্তি, ৩০২ এর পরিবর্তে ৩০৪ যুক্ত করার দাবি তাদের। এই ধারা বাতিল, পুলিশী হয়রানি বন্ধসহ ৭দফা দাবিতেই তারা এ ধর্মঘট পালন করছেন।

(একে/এসপি/এপ্রিল ২৯, ২০১৯)