গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানা পুলিশের একটি দল সাদা পোশাকে উপজেলার রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ডে খোকন মিয়া (৩০) নামক ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে আটকের প্রতিবাদে গৌরীপুর থানার চার এএসআই ও এক পুলিশ কনস্টেবলকে আটকে রাখে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনতা।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে উপজেলার রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী ও জনতা ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।

খোকন মিয়া রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ডে ফ্ল্যাক্সিলোড, মোবাইল যন্ত্রাংশ ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবসা করে। সে ওই ইউনিয়নের বলুহা গ্রামের মৃত আঃ আঃ কদ্দুসের পুত্র।

রামগোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম জিন্নত জানান, সাদা পোশাকে একদল পুলিশ বাসস্ট্যান্ডে ব্যবসায়ী খোকন মিয়ার দোকানে রাত সাড়ে ৯টার দিকে অভিযান চালায়। প্রথম দফায় খোঁজাখুঁিজ করে কিছু পায়নি পুলিশ। তারপর আরেক পুলিশ সদস্য জানায় বৈদ্যুতিক তারের কয়েলের ভিতরে মাদক রয়েছে। এরপর তাকে চর-থাপ্পর মেরে হাতকড়া পড়িয়ে নিয়ে আসার সময় উত্তেজিত জনতা ও এলাকাবাসী বিক্ষুব্দ হয়ে পড়ে। পুলিশের নির্যাতনে আহত ব্যবসায়ী খোকনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে তার চাচা নিশ্চিত করেন।

খোকন মিয়ার ভাই রিপন মিয়া জানায়, আমার ভাইয়ের দোকানে সিসি ক্যামেরা থাকলেও দোকান তল্লাশীর সময় তা বন্ধ করে রাখা হয়।

উত্তেজিত জনতার প্রতিবাদের মুখে ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিলেও জনতা পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে এএসআই আব্দুল আউয়াল, কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, রুহুল আমিন ও কন্সটেবল আল আমিনকে অটোটেম্পু মালিক সমিতির কার্যালয়ে এসে আশ্রয় নিলে জনতা ওই অফিস ঘেরাও করে তাদের আটকে রাখে। এ সময় ঘটনায় জড়িত পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে উত্তেজিত জনতা ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে।

রাত ১২টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) শাখের হোসেন সিদ্দিকী, রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আমিন জনি, রামগোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম মাস্টার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে বিচারের বিষয়ে আশ্বস্ত করায় এলাকাবাসী অবরোধ তুলে দেন।

গভীর রাত পর্যন্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) শাখের হোসেন সিদ্দিকী ও গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) গোলাম মাওলা ঘটনাস্থলে তদন্ত কাজ পরিচালনা করেন। দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে আটক পুলিশ সদস্যদের নিয়ে আসেন।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) গোলাম মাওলা জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) ঘটনার তদন্ত করছেন। ওই পাঁচ পুলিশ সদস্যকে ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) শাখের হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(জেসিজি/এসপি/এপ্রিল ২৯, ২০১৯)