নওগাঁ প্রতিনিধি : গত কয়েকদিনের তীব্র তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমের কারনে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়া শিশু ও বয়স্ক রোগীদের ঢল নেমেছে। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স ও আয়ারা।

বিশেষ করে ডায়ারিয়া, আমাশয় ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। আর চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, শিশুদের নিরাপদে রাখার, বিশুদ্ধ টাটকা, বেশি বেশি পানি ও তরল খাবার খাওয়ানোর। সোমবার হাসপাতালের আউট ডোরে ছিল রোগীর দীর্ঘ লাইন। এটি নওগাঁ সদর হাসপাতালের চিত্র।

গত কয়েকদিন ধরে চলছে তীব্র ভ্যাপসা গরম। হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্করা নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে ভিড় করছে হাসপাতালে। ডায়ারিয়া আমাশয় ও পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্তর সংখ্যায় বেশি।

এদিকে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় কর্তব্যরতদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বেড সংকটে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। যেন পা ফেলার জায়গা নেই। এছাড়া অনেক বয়স্ক রোগী ভর্তি হয়েছে শ্বাসকষ্টে আর পেটের ব্যথা তাদের বেড়ে গেছে গরমে। তাই নওগাঁ সদর হাসপাতালের গেটে দেখা যায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর লম্বা লাইন। চিকিৎসা নিতে আসা এসব রোগীরা ঘন্টার পর ঘন্টা তীব্র রোদে লাইনে দাঁড়িয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আবহাওয়াজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের দিকে আসছে রোগীরা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারনে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ কারনে হাসপাতালে বেডের সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হচ্ছেন মেঝেতে থাকতে। হঠাৎই গরমের কারনে শিশুদের পাতলা পায়খানা হয়। এরপর বমি। অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতালে এসেছেন তারা। হাসপাতালের সেবিকা মোছা: নাছরিন আক্তার বলেন হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় আমরা হিমশিম খাচ্ছি। সময়ের বেশি সময় এখন হাসপাতালে সেবা দিতে হচ্ছে। তবে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি হাসপাতালে আসা রোগীদের সেবা দেবার। তাপমাত্রা একটু কমলেই রোগীদের চাপ অনেকটা কমে যাবে।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: মুনির আলী আকন্দ বলেন, প্রতিদিনই বাড়ছে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের সংখ্যা। রোগীর চাপে হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। তবে আমরা রোগীদের এই গরমে করনীয় সম্পর্কে সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান করছি। আমরা দিনরাত রোগীদের সেবা প্রদান করছি। এরপরও আমরা আমাদের সাধ্য মতো রোগীদের সেবা প্রদানের চেষ্টা করছি।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক), ডাঃ রওশন আরা খানম বলেন, কয়েকদিনের তীব্র ভ্যাপসা গরমে রোগীর চাপ বেড়েছে দ্বিগুন। তবে কোন সমস্যা নাই। এই গরমে শিশুদের সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, নিরাপদে রাখা এবং তরল খাবারসহ বেশি বেশি পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। ২৫০ শয্যার নওগাঁ সদর হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন দেড় হাজারের বেশি রোগী আসে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে। তাই আরো বেশি জনবল বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

(বিএম/এসপি/এপ্রিল ২৯, ২০১৯)