নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর সাপাহারে ঐতিহ্যবাহী জবই বিলে পানি সংরক্ষন প্রকল্পের অধিনে বিলের বুক চিরে বয়ে যাওয়া দোহারা খাড়ী খনন কালে জবই বিলের চাউলাঘাটি নামক স্থান থেকে মানবদেহের মাথার খুলি বুকের হাড়সহ প্রায় ১২ খন্ড মানুষের হাড় গোড়ের সন্ধান পেয়ে সেগুলিকে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে পানিউন্নয়ন বোর্ডের খনন কাজের লোকজন এ হাড় গোড়গুলি উদ্ধার করে।

জানা গেছে, পানিউন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসকেভেটর মেশিন দ্বারা জবই বিলের ওই অংশে খনন কাজ পরিচালনা করার সময় মাটির ৬-৭ ফুট নিচ থেকে এই মাথার খুলিসহ হাড় গোড়গুলো মেশিনের ফলায় ওঠে আসে। সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত উৎসুক জনতা হাড় গোড়গুলি একনজর দেখতে বিল এলাকায় ভিড় জমায়।

বহু পুরনো এই হাড় গোড়গুলো দেখে অনেক বয়স্ক মানুষ মন্তব্য করেছেন, ১৯৭১সালে মহান মুক্তি যুদ্ধ চলাকালে সাপাহার উপজেলার জবই গ্রামটি পাকিবাহিনীর দোসর রাজাকার আলবদরদের গ্রাম ছিল। স্বাধীনতার পরে অনেকেই ওই গ্রামটিকে দ্বিতীয় পাকিস্তান হিসেবে চিনত। সে সময় হয়ত রাজাকার ও পাকিবাহিনীরা নীরিহ কোন মুক্তিকামী মানুষকে ধরে হত্যা করে হয়ত তাদের লাশ ওই এলাকায় পুতে রেখেছিল।

আবার অনেকেই হাড় গোড়গুলি অতীতে কোন নৌকা ডুবি মানুষেরও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন । হাড় গোড়গুলি বের হওয়া বিষয়ে খনন কাজের দেখা শুনার দায়িত্বে থাকা বাবু নামের একজনের সাথে কথা হলে প্রথমে তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান। পরে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমি রবিবারে শুনেছি এবং আজ সোমবার তা আমার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

এ ব্যাপারে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুল আলম শাহ্ জানান, আমিও বিষয়টি লোক মুখে শুনেছি এবং বহুকাল পূর্বে বিলের ওই অংশে হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান ঘাট ছিল বলে শুনেছি। তবে কয়েকদিন যাবত মানুষের কঙ্কাল বা হাড়গোড় বিল এলাকায় পড়ে থাকলেও কোন কর্তৃপক্ষই এখন পর্যন্ত সে হাড়গোড়গুলো সেখান থেকে উদ্ধার করেনি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার অভিজ্ঞ মহল এখন উদ্বিগ্ন।

(বিএম/এসপি/এপ্রিল ২৯, ২০১৯)