সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা : পৃথিবীতে সব মানুষেরই স্বপ্ন থাকে। তবে কারো জীবনে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়, আবার কারো কারো জীবনে স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যায়। আর স্বপ্নপূরনের বিষয়টি অনেকটা নিজের চেষ্টা আবার অনেকটা ভাগ্যের উপরও নির্ভর করে। তবে কথায় আছে মানুষ নিজেই নিজের ভাগ্য বিধাতা। অর্থাৎ যে মানুষটি তার ভাগ্য বদলের জন্য একান্ত ভাবে চেষ্টা করেন, সেই চেষ্টাই তাকে সৌভাগ্যের স্বর্ণ শিকরে পৌঁছে দেয়। বরং চেষ্টা না করে ফলের আসা করাই স্বপ্নপূরণ না হওয়ার নামান্তর। 

মহান মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে লালিত হয়ে বঙ্গবন্ধু কণ্যা বিশ্বমানবতার জননী পদকে ভূষিত দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রিয় মাতৃভূমি ও জন্মভূমি বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার দুচোখ ভরা স্বপ্ন যারা সর্বদাই দেখেন, তারা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও নেত্রকোনা-৩ আসনের এম.পি অসীম কুমার উকিল ও বাংলাদেশ যুব মহিলালীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক এম.পি অধ্যাপক অপু উকিল। আজ যাদের নিয়ে কিছু বলা বা লিখার চেষ্টা করছি, তাদের সংগ্রামী জীবন ও সাফল্য গাঁথা নিয়ে আমার মতো ক্ষুদে একজন কলম সৈনিকের পক্ষে মোটেও বিশদ আলোচানা বা লিখা সম্ভব নয়। কেননা তাদের জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত, প্রতিটি ক্ষণ, ধাপে ধাপে সিড়ি বেয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার গল্প সংগ্রামী জীবনের, অনেক ত্যাগের, অনেক কর্ম যজ্ঞের ফসল।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি স্বাধীন ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে সারা বিশ্বে আমরা বলে থাকি বাংলাদেশ। তবে এই দেশের শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষ ধর্মীয় আবেশে বেড়ে ওঠা। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় মুসলমান। বাকি সব অন্য ধর্মের অনুসারী লোক। অসীম কুমার উকিল এবং অধ্যাপক অপু উকিল ধর্মীয় আবেশে বড় হলেও সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞান মনষ্ক চিন্তা চেতনা নিয়ে দেশ গড়ার কাজে ব্রতি হয়েছেন। সাম্প্রদায়িক কোন চিন্তা চেতনাই তাদেরকে কুলষিত করার সুযোগ নেই। এর পরও তাদেরকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনা আলোচনা সমালোচনা হয়েছে অনেক।

বিশেষ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অনেকের মুখে মুখে আলোচনাতো হয়েছেই এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও লিখা হয়েছে। এসব কাজকে তখনই করা হয়, কোন হিন্দু অথবা কোন মুসলমান বা অন্য কোন ধর্মের মুক্ত চিন্তার মুক্ত বুদ্ধির মানুষের ভালো কাজকে ছাই চাপা দিয়ে পেছন ফেলার জঘন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় সাম্প্রদায়িক ইসু তুলে দিয়ে। অসীম কুমার উকিল ও অধ্যাপক অপু উকিলের বেলায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এবং তাদের রাজনৈতিক জীবনে পদ পদবী ক্ষেত্রেও অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোন চেষ্টাই বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার সু-দৃঢ় চিন্তা চেতনাকে দমাতে পারেনি। সময়ের সিঁড়ি বেয়ে সামনের দিকে পথ চলার অম্লান চেষ্টাই উপরে তুলে নিয়ে যাচ্ছে অসীম অপু জুটিকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন থেকেই জয় বাংলা শ্লোগান কণ্ঠে ধারন করে ৯০’র দশকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পদাকের দায়িত্ব পালন করে ধাপে ধাপে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নিজের জায়গা তৈরি করে নেন অসীম উকিল। সেটি কোন গোষ্ঠিগত বা মামু চাচার জোড়ে নয়। সম্পূর্ণ তার একনিষ্ঠ কর্মকান্ড ও অধ্যাবসায়ের ফসল। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গণ আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব দিয়ে কেন্দুয়ার সান্দিকোনার অসীম কুমার উকিল সারা দেশ তথা দেশের বাইরে আলোচনা শিরোনাম হন তিনি।

সে সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের নিকট নতি স্বিকার করে দল ছেড়ে চলে যান ব্যক্তি স্বার্থের লাভে। কিন্তু অসীম কুমার উকিল জীবন পন করে আন্দোলন সংগ্রাম না ছেড়ে পতন গঠান স্বৈরাচারের। এর পর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক, ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দলের প্রতিনিধি হিসেবে দেশে এবং বিদেশে আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নিয়ে সফলতার স্বাক্ষর নিয়েছেন। তার চিন্তা চেতনা ও দুচোখ ভরা স্বপ্ন কিভাবে বাংলাদেশ ও আওয়ামীলীগকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধ করা যায়।

আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য কোন চিন্তা চেতনা যেমনটি নেই অসীম কুমার উকিলের, তেমনটি নেই তারই প্রিয় সহধর্মীনি রাজপথ কাপানো ও মিছিলে লড়াইয়ের সংগ্রামী বীর সাবেক ছাত্র নেতা বাংলাদেশ যুব মহিলালীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক এম.পি অধ্যাপক অপু উকিলের। বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও তার প্রিয় সহধর্মীনি মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শহীদ আইভি রহমানের জুটির পর বাংলাদেশে অসীম অপু জুটির সারা বাংলাদেশ তথা দেশের সীমানা পেড়িয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে গতিশীল করার কাজে এগিয়ে যাচ্ছেন অত্যন্ত সাহসিকতা ও সততার সঙ্গে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিটি পথসভায়, উঠোন বৈঠক ও সভা সমাবেশে অসীম কুমার উকিল ও অধ্যাপক অপু উকিল নেত্রকোনা-৩ কেন্দুয়া আটপাড়া নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতাকর্মী সহ সাধারন জনগণকে যেসব নতুন কথা শুনিয়েছেন, সে সময় অনেকেরই মনে হয়েছে নির্বাচন চলাকালিন সময়ে নিজেকে মেলে ধরার জন্য অনেক প্রার্থীই অনেক কথা বলে থাকেন। পরে বাস্তবে তার আর ফল খুঁজে পাওয়া যায় না। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে অসীম কুমার উকিল ও অধ্যাপক অপু উকিল তাঁদের দেয়া প্রতিশ্রুতিমতো সামনের দিকে কাজ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।

নির্বাচনের পর তাকে কোন ফুলের তোরা বা সংবর্ধনা দেয়ার কথা সাফ সাফ সকলকে জানিয়ে দেন। এমনকি নেননিও কোন সংবর্ধনা। একটি কাজের দাবী জানাতে দল বেঁধে ঢাকায় না গিয়ে ফোনে তাকে বললেও অথবা কেন্দুয়ার বাড়িতে আসলে সে বিষয়ে কথা বললেও সমাধানের কথা আগেই সকলকে বলে দিয়েছিলেন। এখন এমনটিই বাস্তবে হচ্ছে। অসীম কুমার উকিল নির্বাচনের আগে প্রতিটি সভা সমাবেশে বলেছেন “যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে দেশ ততদিন নিরাপদে বাংলাদেশ” এই লক্ষ্যে কেন্দুয়া আটপাড়ার আওয়ামীলীগ তথা দলীয় নেতাকর্মীকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আটপাড়া উপজেলায় সম্মেলন গত পাঁচ বছর আগে সভাপতি সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হচ্ছিলনা। কিন্তু অসীম কুমার উকিল এম.পি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই আটপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।

পাশাপাশি সহযোগি সংগঠন যুব মহিলালীগের বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটি গঠন করে নারী সমাজকে জাগিয়ে তুলছেন অধ্যাপক অপু উকিল। অর্থাৎ তারা দুজনে মিলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন কেন্দুয়া আটপাড়া তথা নেত্রকোনা জেলা ও দেশের বিভিন্ন নেতাকর্মীর মাঝে। ইতি মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে সুন্দর পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন সংস্লিষ্ট কর্মকর্তা ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের। এর সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে এই নির্বাচনি এলাকার জনগণ। এই নির্বাচনী এলাকার জনগণের লাখো কন্ঠের দাবী ওঠেছে বঙ্গবন্ধু কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট যেন আগামী সম্প্রসারিত মন্ত্রী সভায় অসীম কুমার উকিলকে মন্ত্রীসভার সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার। কেননা অবিভক্ত ভারতের মন্ত্রী সভায় কেন্দুয়ার সাজিউড়া গ্রামের সন্তান প্রয়াত নলীনি রঞ্জন সরকার অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন এবং তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের মন্ত্রী সভায় কেন্দুয়ার কাউরাট গ্রামের কৃতি সন্তান প্রয়াত হাফিজুর রহমান ও বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।

স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে গরবিনী এই কেন্দুয়া আর কোন এমপি বা ব্যক্তিকে মন্ত্রী পরিষদের সদস্য অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। তাই সকলেরই আশা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুচোখ ভরা স্বপ্ন যাদেঁর সেই জন্মভূমিকে ঢেলে সাজাতে এবার স্বপ্ন মেলবে ডানা অসীম অপু উকিলের। এ আশায় বুক বেঁধে আছেন এই অবহেলিত অঞ্চলের হাজার হাজার, লাখো লাখো মুজিব আদর্শের সৈনিকেরা।

লেখক : সমকাল সাংবাদিক, সভাপতি কেন্দুয়া উপজেলা প্রেসক্লাব।