কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার জয়কা সাতাশি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র সরকারকে পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেল ৫ যুবক। 

শিক্ষকের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়ার একদিন পর ৫ যুবক আটকের ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। কেন্দুয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে জয়কা গ্রামের ফয়সাল (২৬), দ্বিনইসলাম (৩৪), চকপাড়া গ্রামের নিবির (১৯), মাসকা গ্রামের আলী হোসেন (২৫) ও রকি (২০) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে এনেছে।

তবে দ্বিনইসলাম পালিয়ে যাওয়ার সময় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রায়বাজার আঠারোবাড়ি এলাকা থেকে মঙ্গলবার সকালে আটক করে পুলিশ। রোববার বিকালে কেন্দুয়া থানা পুলিশ জয়কা সাতাশি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র সরকারকে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।

গোপন সূত্রে পুলিশ খবর পায় বিদ্যালয়ের পাশে তার রেখে যাওয়া নিজস্ব মোটর সাইকেলে একটি নেকরার মধ্যে হিরোইন রয়েছে। থানায় আনার পর পুলিশ মোটর সাইকেলটি তল্লাশী করে হিরোইন সাদৃশ্য বস্তু খুঁজে পেলেও এলাকার ছাত্র অভিভাবক ও সুধি মহল এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা সকলেই থানায় এসে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে পুলিশকে জানায়, এ ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র সরকারও এ ঘটনা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবী করেন। একই সঙ্গে তিনি এর সুষ্ঠু তদন্তও দাবী করেন।

কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সুধিজনের কথা আমলে নিয়ে স্থানীয় আব্দুল বারি ভূঞা বকুলের জিম্মায় প্রধান শিক্ষককে ছেড়ে দেন। পরে পুলিশ চতুর্দিক থেকে এ বিষয় নিয়ে তদন্তে নামেন। বিদ্যালয়ের পাশে একটি দোকানের মালিক দ্বিন ইসলাম এ ঘটনার পর থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশের সন্দেহ বাড়তে থাকে। এ সন্দেহের সূত্র থেকেই নিবির, আলী হোসেন, রকি, দ্বিন ইসলাম ও ফয়সালকে আটক করে।

তবে ফয়সাল মেট্রো রেলের একটি প্রকল্পে কর্মরত বলে জানা যায়। তিনি নিজেকে ডিগ্রী পরীক্ষার্থী ও নির্দোষ বলে দাবী করেন। মাসকা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঞা বকুল মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, আমাদের এলাকার ছাত্র অভিভাবক ও সুধিজনের ধারনা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র সরকারকে একটি বিশেষ চক্র সামাজিক হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পরিকল্পিত ভাবে মোটর সাইকেলের মধ্যে একটি নেকরার ভিতর হিরোইন সাদৃশ্য বস্তু রেখে পুলিশকে খবর দেয়।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের পর তপন চন্দ্র সরকারকে আমার জিম্মায় নিয়ে যাই। তবে পুলিশ সন্দেহ করে যাদেরকে আটক করেছে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইমারত হোসেন গাজী বলেন, “শিক্ষককে ফাঁসাতে গিয়েই ফেঁেস গেল ৫ যুবক” বিষয়টি অনেকটা এরকমই। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এসবি/এসপি/এপ্রিল ৩০, ২০১৯)